Created by Admin Blog 2020-04-12
দিন লিপিঅ্যাডিডাস (Adidas)ঃ
আপনাকে যদি বলতে বলা হয় কিছু জুতার দামি ব্র্যান্ডের নাম বলুন, প্রথমেই যে নামটি মাথায় চলে আসবে সেটা হলো অ্যাডিডাস। ইউরোপের সর্ববৃহৎ এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম খেলাধুলার সামগ্রী নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানটি হলো জার্মান মাল্টিন্যাশনাল কর্পোরেশন অ্যাডিডাস।
আজ থেকে ৬৮ বছর আগে ১৯৪৯ সালে অ্যাডিডাস নাম নিয়ে অ্যাডলফ ড্যাজলারের হাত ধরে শুরু হয় কোম্পানির যাত্রা। নিজের নামের দুই অংশ Adolf ও Dassler-কে একত্রিত করে তিনি নাম ঠিক করেন ‘Addas’। কিন্তু এ নামে আগে থেকেই আরেকটি শিশুদের জুতা তৈরির প্রতিষ্ঠানের নাম নিবন্ধন করা ছিল। তাই শেষ পর্যন্ত তিনি ‘Adidas’ নামটিকে বেছে নেন।
এপেল(Apple)ঃ
একটা ব্যাপার নিয়ে প্রায়ই ভাবতাম অ্যাপেল কোম্পানি কেনো নিজেদের নাম অন্য কোনো ফলের নাম না রেখে অ্যাপেল ই কেনো রাখলো? লোগোটিই বা কীভাবে আসলো? এই ভাবনা থেকে ব্যাপারটা নিয়ে একটু ঘাটাঘাটি করলাম, আর ঘাটাঘাটি করে যা জানতে পারলাম লোগো সম্পর্কে তা তুলেধরার চেষ্টা করলাম।
অ্যাপলের প্রথম লোগো ছিল স্যার আইজ্যাক নিউটন আপেল গাছের নিচে বসে আছেন। সেই বিখ্যাত আপেল থেকেই অ্যাপল এর লোগো। এখানে ব্যবহার করা হয়ে ছিল Wordsworth এর একটি উক্তিঃ
Newton… A Mind Forever Voyaging Through Strange Seas of Thought… Alone
আমার মনে হয়েছে স্টিভ জবস রোনাল্ডওয়েনের অ্যাপলের প্রথম লোগোটির বড় ফ্যান ছিলেন না। তাই এক বছরের মধ্যে স্টিভ আরেকজন গ্রাফিক ডিজাইনার রব ইয়ানভফকে একটি নতুন লোগো ডিজাইন করতে বললেন। তিনি অ্যাপল লোগোতে “কামড়” নিয়ে এসেছিলেন এবং স্টিভ এটিকে স্ট্রিংবোর রং যোগ করেছেন।
গুগল (Google)ঃ
ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা সকলেই গুগলের সঙ্গে পরিচিত। বর্তমানে গুগলকে ইন্টারনেট এর রাজা বললেও কম হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার মাউনটেইন ভিউ শহরে অবস্থিত গুগলের প্রধান কার্যালয়। মানুষের কাছে তথ্য সহজলভ্য করতে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। গুগল একসঙ্গে এত বিষয় নিয়ে কাজ করে যে সবকিছুর হিসাব রাখাই কঠিন। সফলদের স্বপ্ন গাথা ইন্টারনেট জগতে সার্চ ইঞ্জিন গুগলকে কে না চেনে। ল্যারি পেইজ এই গুগলেরই উদ্ভাবক।
আজ থেকে ১৯ বছর আগে ১৯৯৮ সালে ল্যারি ও তার বন্ধু সার্জি ব্রিন মিলে যাত্রা শুরু করে বর্তমানের সার্চ জায়ান্ট গুগল। তবে‘গুগোল’ থেকে এসেছে আজকের গুগলের নাম। ইংরেজিতে এর বানান ‘জি ও ও জি ওএল’। যার মানে হচ্ছে একের পর ১০০ টি শূন্য। নামকরণে সংখ্যাকে গুরুত্ব দেয়া প্রতিষ্ঠানটির মুনাফার অঙ্কটিও কিন্তু কম নয়।
আমাজন(Amazon)ঃ
বিখ্যাত ক্রয়–বিক্রয় সাইট আমাজন। যাত্রা শুরু করে জেফ বেজোসের হাত ধরে। জেফ বেজোস, আমাজন সাইটের প্রতিষ্ঠাতা যাঁর জন্ম হয়েছিল ১২ জানুয়ারি। বর্তমানে তিনি এই প্রতিষ্ঠানটির ফাউন্ডার, প্রেসিডেন্ট ও চিফ এক্সিকিউটিভ পদে আছেন।
আমেরিকান ই–কমার্স কোম্পানি আমাজন.কম স্থাপিত হয় ১৯৯৪ সালে। প্রথম দেখায়, আমাজনের লোগোটি বিশেষ কিছু মনে হয় না। শুধুই একটি কোম্পানি নাম। কিন্তু আসল বিশেষত্ব, এর নিচের কমলা রঙের তীর চিহ্নটিতে।
ইউনিলিভার(Unilever)ঃ
বিশ্বের বৃহত্তম মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোর মধ্যে নিঃসন্দেহে প্রথম সারির প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভার। খাদ্য, পানীয়, প্রসাধানী থেকে শুরু করে চার শতাধিক ব্র্যান্ডের পণ্য আছে এই ব্রিটিশ–ডাচ কোম্পানিটির। গৃহস্থালীর পণ্য উৎপাদনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান এটি। তবে এই ইউনিলিভারের নাম এক সময় ইউনিলিভার ছিল না।
১৯৩০ সালে নেদারল্যান্ডসের কোম্পানি ‘মার্জারিন ইউনি’ এবং ব্রিটিশ কোম্পানি ‘লিভার ব্রাদার্স’ মিলে তৈরি করে ইউনিলিভার। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির যে লোগো দেখা যায় তার পেছনেও রয়েছে এক গল্প। তাদের লোগো দেখতে ইংরেজি বর্ণ ইউ–র (U) মতো এর ভেতরে আছে এলোমেলো কিছু নকশা। আমাদের কাছে এলোমেলো লাগলেও এর ভেতরে থাকা ২৫টি আইকনের নকশা অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে সাজানো হয়েছে।
ফর্মুলা ওয়ান(Formula 1)ঃ
ফর্মুলা ওয়ান মানেই গতি, সেই ১৯৫০ সাল থেকে ট্র্যাকে মার্সিডিজ, ফেরারি, হোন্ডা আর রেনো নিয়ে রোমাঞ্চকর গতির ঝড় তুলে যাচ্ছেন লুইস হ্যামিল্টন, জনসন বাটন, জিম ক্লার্করা ও হ্যাঁ, এবং অবশ্যই দ্যা গ্রেটেস্ট মাইকেল শুমাখার।
বাসকিন রবিন্স(Baskin robbins)ঃ
আইসক্রিম! আইসক্রিম! ছোট বেলায় যখন টুনটুন করে বেজে উঠতো ঘণ্টা আমরা অনেকেই দৌড়ে যেতাম আইসক্রিমের ছোট গাড়িটির কাছে আর লুফে নেয়ার চেষ্টা করতাম পছন্দের আইসক্রিমটি।এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবেনা এই বিশ্বে যে এই লোভনীয় খাবারটি একেবারেই পছন্দ করেন না।
বর্তমানে আইসক্রিম অত্যন্ত সহজলভ্য একটি খাবার। বিভিন্ন স্বাদের বিভিন্ন ধরনের আইসক্রিম রাজত্ব করছে বিশ্বব্যাপী। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই আছে নিজস্ব নামিদামি ব্র্যান্ড। পাশ্চাত্যের আইসক্রিম কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা হয়মূলত ফ্লেভারের সংখ্যা নিয়ে। হাওয়ার্ড জন্সন যদি তৈরি করে ২৮ রকম, তা হলে বাসকিন রবিন্স তৈরি করবে ৩১ রকম।
আরো অনেক লোগো আছে যাদের মধ্যে লুকোনো আছে আরো অনেক কথা, অনেক ইতিহাস। আপনার যদি নতুন কোনো লোগো তৈরির ইতিহাসের গল্প জানা থাকে তাহলে শেয়ার করে ফেলুন আমাদের সাথে। কেননা আমরাও সব সময় অপেক্ষায় থাকি নতুন কিছু শেখার!
© 2019 BoiBazar.com All Rights Reserved | Design by BoiBazar.com