Created by Admin Blog 2020-03-25
পড়া শুনা"বই কেন পড়া উচিত?"
"এক মাসের মধ্যে নিজেকে কিভাবে বদলাবো?"
" কি করলে জীবনে উন্নতি আসবে?"
"সফল ব্যাক্তি হতে হলে কি করা লাগবে?"
এই জাতীয় প্রশ্নের খুব কমন উত্তর হচ্ছে দশটা বা বিশটা পয়েন্টে দিয়ে জ্ঞান দিয়ে যাওয়া। লিওনেল মেসি কিংবা ক্রিস্টিয়ানো রোনালন্ডোকে চেনেন? এরা কিন্তু শিক্ষিত না। আর আমি কোথাও দেখি নাই এদের বই পড়ার অভ্যাস আছে। কিন্তু দুইজনই শতাব্দীর সেরা ফুটবলার। তাদের কাজে তারা সফল।( তারা বই পড়ে এমন আমি কোথাও পাই নি, তবে পড়তেও পারে। উদাহরণটা কেবল বুঝানোর জন্য) এমন কিন্তু না যে বই না পড়লে জীবনে উন্নতি অসম্ভব। অনেক মানুষ পাওয়া যাবে জীবনে বই পড়ে নি কিন্তু হাসতে হাসতে লাইফ কাটাতে পেরেছে বা পারছে।
ধরুন আমি বললাম অবশ্যই সবার বই পড়া উচিত। আমি নিজে প্রতিদিন পড়ি আমার স্কিল অনেক বেড়েছে। আমি এই হয়েছি সেই হয়েছি। বই পড়ে আমার এই এই জিনিস উদ্ধার হয়েছে। আমার কথা শুনে আপনি বই পড়ার ব্যাপার খুবই উৎসাহিত হলেন। এবং সব বই খা দেংগে টাইপ একটা ফিলিংস নিয়ে পনের বিশখান বই কিনলেন।
আপনি আবার এমন মানুষ যার কাছে বইপড়া ভ্যালিডিটি ছাড়া বিষ খাওয়ার মত। বই নিলেন আর বিষ পান করা শুরু করলেন। কিছুক্ষন খাওয়ার পর যখন জ্বলা শুরু হলো আপনি আমার গুষ্টির তুষ্টি করে সব বই দিয়ে মুড়ির ঠোংগা বানায় ঝালমুড়ি মামার কাছে বেচে দিলেন। আর জীবনে এই রাস্তায় আসুম না টাইপ শপথ নিলেন। লাভের মধ্যে লাভ ঝালমুড়ি মামার হইলো, সস্তায় কিছু ঠোংগা পাইলো। আপনার কেবল কিছু টাকার শ্রাদ্ধ হলো।
দেখুন বইপড়া খুবই ভাল কাজ। সম্ভব হলে সবার বইপড়া উচিত। কিন্তু মনে রাখতে হবে এইটা কোন ট্রেন্ড না। আজকে সবাই বই পড়ে তাই আমাকেও পড়তে হবে এর কোনও মানে নাই৷ এইভাবে বই পড়তে গেল টাকাই নষ্ট হবে আর কিচ্ছু না৷ আর সোলাইমান শালিক মোটিভেশনের বই পড়ে শুনে আপনারও তাই পড়তে হবে ব্যাপারটা তাও না।
আমি ইংরেজি কোরাতে সবচেয়ে বেশীবার যেই টিপসটা পড়ছি তা হলো ভোর ৪ টায় ঘুম থেকে না উঠলে জীবনে কোনদিন উন্নতি হবে না। আমি আমাকে যতদূর চিনি আমার যদি উন্নতির একটু সম্ভাবনাও থাকে, ৪টায় উঠা শুরু করলে ওইটাও আর থাকবে না। বাই দ্যা রাস্তা, সফল সঙ্গীত শিল্পিরা কয়জন ভোর চারটায় ওঠে জানিনা, অনেকে ৪টায় ঘুমাতে যায় এমনও শুনি মাঝে মাঝে।
বই আমার মতো আপনার মতো আরেকজন রক্তমাংসের মানুষেরই লিখা কিছু কথা। তার কল্পনা কিংবা তার গবেষণা যা পড়লে আপনি নতুন কিছু জানতে পারেন কিংবা আনন্দ পেতে পারেন।
কিন্তু দুনিয়ার প্রত্যেকটা মানুষই আলাদা। সবার ভাল লাগা মন্দ লাগা আলাদা। কেউ জীবন থেকে শিখে, কেউ বই থেকে শিখে, কেউ বই এবং জীবন দুটা থেকেই শেখে। আপনার বই পড়তে ভাল লাগে না। তাইলে জোর করে পড়তে যাওয়ার কোনও মানে নাই। না পাবেন আনন্দ না পারবেন শিখতে। হুদাই কিছু সময় নষ্ট হবে। সময় অনেক সীমিত, নষ্ট করবেন কেন? আর যদি পড়তে ভাল লাগে, তাইলে অবশ্যই পড়বেন৷ কিন্তু আমি যেই জনরার কথা বলবো বা যেই যেই বই পড়তে বলবো এগুলা জীবনেও পড়বেন না৷ আপনি খুঁজে বের করবেন আপনার কোনগুলা পছন্দ। পড়তে ভাললাগলে এইটা বের করা এমন কোন বিগডিল না।
সৃস্টিকর্তা কাউকে মানুষের হাড়গোড় ভাঙতে বানিয়েছেন আবার কাউকে সেটা জোড়া লাগাতে। কাউকে বানিয়েছেন পড়তে আর কাউকে বানিয়েছেন দেখতে। সবারই যে বই পড়তে হবে এমন কোনও কথা নাই। বিশ্বজোড়া পাটশালারে ভাই, শিখার জন্য মাধ্যমের অভাব নাই৷ বই শুধুই আরেকটা মাধ্যম।
আরেকজনের দশটা পয়েন্ট তার জীবনে উন্নতি আনতেই পারে। কিন্তু অন্ধের মত তার দশটা পয়েন্ট ফলো করলে আপনার বুড়া আঙুল চুষে জীবন পার করা লাগে নাকি কে জানে?
© 2019 BoiBazar.com All Rights Reserved | Design by BoiBazar.com