ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ সম্রাট বলল, তুমি আজ চলে যাবে, কিছুই বলে যাবে না! মিনু চোখ তুলে সম্রাটের দিকে তাকাল। কী বলব? তোমার সঙ্গে আবার কবে আমার দেখা হবে কে জানে! আদৌ হবে কিনা তাও জানি না। তুমি পৃথিবীর একপ্রান্তে থাকবে আমি আরেক প্রান্তে। দেশে ফিরলেও তোমার সঙ্গে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা আমার খুব কম। দেখা হলেও আজকের এই মানুষ তুমি তখন থাকবে না। সময়ের চাপে আমিও হয়ে যাব অন্য মানুষ। আজকের মতো দুজন দজনার মুখের দিকে আমরা কখনও তাকাব না। বুকের ভেতর দুজনারই আমাদের বয়ে বেড়াবে না অব্যক্ত গভীর কোনও দুঃখ বয়ে বেড়ানে না অব্যক্ত গভীর কোনও দুঃখ বেদনা। মিনু আস্তে করে বলল, কে বলেছে আপনাকে? আমি জানি। আপনি ভুল জানেন। যেখানেই থাকি, যতদূরেই থাকি আপনার কথা আমি কখনও ভুলতে পারব না। হঠাৎ হাওয়ায় ভেসে আসা ফুলের মিষ্টি সৌরভের মতো মনে পড়বে আপনার কথা। আপনার কথা ভেবে যখন তখন আনমনা হয়ে যাব আমি। উদাস হয়ে যাব, বুক কাঁপিয়ে দীর্ঘশ্বাস পড়বে আমার। আমারও পড়বে। ঠিক তোমার মতো বুক কাঁপিয়ে তোমার জন্যে দীর্ঘশ্বাস আমারও চিরকাল পড়বে। কী এক অদ্ভুত সম্পর্ক হলো আমাদের। দুজন দুজনার জন্যে সারাজীবন দীর্ঘশ্বাস ফেলে যাব আমরা, কিন্তু কেউ কারুর কাছে ফিরতে পারব না।
ইমদাদুল হক মিলন
৮ সেপ্টেম্বর ১৯৫৫ বিক্রমপুরে জন্ম। প্রথম গল্প। ‘বন্ধু’ ১৯৭৩। প্রথম উপন্যাস যাবজ্জীবন ১৯৭৬। বাংলাদেশে সাহিত্যের পাঠক সৃষ্টিতে ব্যাপক ভূমিকা। তিন পর্বের দীর্ঘ উপন্যাস ‘নূরজাহান’ কালজয়ী সাহিত্য হিসেবে গণ্য। দেশ বিদেশে বহু পুরস্কারে সম্মানিত। বাংলা একাডেমি পুরস্কার ১৯৯২। তাকেশি কায়েকো মেমােরিয়াল এশিয়ান রাইটারস লেকচার সিরিজে বাংলা ভাষার একমাত্র লেখক হিসেবে অংশগ্রহণ ২০০৫। ভারতের আইআইপিএম সুরমা চৌধুরী স্মৃতি আন্তর্জাতিক সাহিত্য পুরস্কার ২০১২।