ভূমিকা কিছুদিন পূর্বে কোনো একটি অনুষ্ঠানে আমাকে একজন ‘কলাম লেখক’ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়েছিল। ব্যাপারটিতে আমি বিশেষ শংকা অনুভব করেছি কারণ ‘কলাম লেখক’ বললেই আমার চোখের সামনে ছিদ্রান্বেষী-নিন্দুক-সবজান্তা একজন মানুষের ছবি ভেসে আসে। শুধু তাই নয়, আমার ধারণা কলাম লেখকরা কারো প্রশংসা করেন না, তারা সব সময় সমাজ-সংসারের যাবতীয় বিষয়কে গালাগাল করেন! এই সংকলনের লেখাগুলিও যে এই দোষ থেকে মুক্ত আমি মোটেও তা দাবী করব না এবং আমিও যে ধীরে ধীরে ছিদ্রান্বেষী-নিন্দুকে পরিণত হয়ে যাচ্ছি সে ব্যাপারেও আমার কোনে সন্দেহ নেই। সে কারণে আমি দীর্ঘদিন থেকে আমার কলম সংবরণ করার চেষ্টা করছি কিন্তু মাঝে মাঝেই তাৎক্ষণিক ক্ষোভ প্রকাশ করার জন্য দাঁত কিড়মিড় করে কিছু একটা লেখা হয়ে যাচ্ছে। সেই লেকা পড়ে অনেকে আমাকে দয়ার্দ্র কথা বলেছেন এবং অনেকেই অভিসম্পাত করেছেন। অভিসম্পাতের পাল্লা ভারী হওয়ার আগেই যে আমার কলম নিবৃত্ত করতে হবে সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।
এই সংকলনের লেখাগুলির ব্যাপারে একটি ছোট কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। পত্র-পত্রিকায় আমি এ পর্যন্ত যা লেখালেখি করেছি তার সবগুলিই পুরোটুকু হুবহু অবিকৃতভাবে প্রকাশিত হয়েছে- “খবর যখন বিক্রি হয়” শুধু মাত্র এই লেখাটি ছাড়া। সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আমার ক্ষোভটুকু থেকে খানিকটা অংশ পত্রিকায় প্রকাশ করা হয় নি। (সম্পাদক মহোদয় অবশ্যি সে জন্যে আগেই আমার কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছিলেন।) এই সংকলনটি যেহেতু সংবাদপত্র নয়- আমি আমার লেখার পুরোটুকুই এখানে সংকলিত করে দিচ্ছি।
মুহম্মদ জাফর ইকবাল ২৪/১১/৯৯ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট
সূচি * কলঙ্ক * লেখালেখি * হরতাল পচা গন্ধ * আমাদের এখন বড় দুঃসময় * ধর্ম শিক্ষা ও সাধারণ শিক্ষা * অধ্যাপক কাজেম আলীর একদিন * আর কতো শর্ট-কার্ট? * আমি যদি প্রধানমন্ত্রী হতাম * গোলাম আযমকে বলছি * এক কোটা ভালবাসা * আমাদের সেই ক্রিকেট খেলা * তিনি যদি আজ থাকতেন * খবর যখন বিক্রি হয় * বিজ্ঞান ও কারিগরী শিক্ষার উন্নয়ন * আমার সাধ না মিটিল * মৃত্যু কতো প্রকার ও কি কি? * খোলা চিঠির উত্তর * ‘শহীদ জননী জাহানারা ইমাম হল’ * হিমঘরে ঘুম
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
মুহম্মদ জাফর ইকবাল জন্ম : ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫২, সিলেট। বাবা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ফয়জুর রহমান আহমদ এবং মা আয়েশা আখতার খাতুন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, পিএইচডি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটন থেকে। ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এবং বেল কমিউনিকেশান্স রিসার্চে বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করে সুদীর্ঘ আঠার বছর পর দেশে ফিরে দীর্ঘদিন অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছেন। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্ত্রী প্রফেসর ড. ইয়াসমীন হক, পুত্র নাবিল এবং কন্যা ইয়েশিম।