তিন বছর কবিতা ও দেশ থেকে দূরে বাস করে আমি অসুখে ছিলাম, ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলাম কবিতা ও দেশের জন্যে, যদিও দিনরাত কবিতা আমি কখনো লিখিনি, অন্য অনেক কিছু আমি লিখেছি। দেশে ফিরে আসার পর অন্যান্য লেখার-গবেষণা ও সমালোচনার-পাশাপাশি দু-বছরে লেখা হয় জ্বলো চিতাবাঘ-এর কবিতাগুলো। অলৌকিক ইস্টিমার-এর কবিতাগুলো থেকে এ-বইয়ের কবিতাগুলো অনেক ভিন্ন ও জটিল, অনেকটা প্রতীকবাদী কবিতার রীতিতে লেখা, অনেক বেশি পরোক্ষ। এ-সময় প্রতীক ও চিত্রকল্প আমাকে অধিকার করে ছিল, এবং তীব্র প্রেম ও কামনা জেগে উঠেছিল মনে ও দেহে; তাই প্রতীক-চিত্রকল্প পাওয়া যাবে স্তবকে স্তবকে, মিলবে দাবানলের মতো কামনা। জ্বলো চিতাবাঘ-এর কবিতাগুলো অনেক বেশি শিল্পিত অলৌকিক ইস্টিমার- এর কবিতা থেকে, পরিপার্শ্বের বদলে এখানে প্রধান হয়ে উঠেছে কল্পনা।
হুমায়ুন আজাদ
হুমায়ুন আজাদ (২৮ এপ্রিল ১৯৪৭ - ১১ আগস্ট ২০০৪; ১৪ বৈশাখ ১৩৫৪ - ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন একজন বাংলাদেশী কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, সমালোচক, গবেষক, ভাষাবিজ্ঞানী, কিশোর সাহিত্যিক এবং রাজনৈতিক ভাষ্যকার। তিনি বাংলাদেশের প্রধান প্রথাবিরোধী এবং বহুমাত্রিক লেখক যিনি ধর্ম, মৌলবাদ, প্রতিষ্ঠান- ও সংস্কারবিরোধিতা, নিরাবরণ যৌনতা, নারীবাদ ও রাজনীতি বিষয়ে নির্মম সমালোচনামূলক বক্তব্যের জন্য ১৯৮০-র দশক থেকে ব্যাপক পাঠকগোষ্ঠীর দৃষ্টি আর্কষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
২০০২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি জার্মান কবি হাইনরিখ হাইনের উপর কাজ করার জন্য জার্মান সরকারের নিকট একটি বৃত্তির আবেদন করেছিলেন। ২০০৪-এর ৭ আগস্ট জার্মান কবি হাইনরিখ হাইনের ওপর গবেষণা বৃত্তি নিয়ে জার্মানি যান।
২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের ১১ আগস্ট রাতে একটি পার্টি থেকে প্রত্যাবর্তনের পর আবাসস্থলে আকস্মিকভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন হুমায়ুন আজাদ। ১২ আগস্ট ফ্ল্যাটের নিজ কক্ষে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।