দরবার হলের ভেতরে সৈনিকদের ভীর বাড়তে থাকে। সবার মুখ কাপড়ে বাঁধা। হাতে অস্ত্র। সৈনিকদের মধ্যে একজন বলে উঠল, ‘হাত ওপর এবং সামনে অ্যাডবান্স।’ কর্মমর্তারা এই লাইনে হাঁটছেন। অস্ত্রধারীরা পেছন থেকে নির্দেশ দিচ্ছে, সামনে বাঁ পাশে কেউ হাঁটছে না। বিডিআরের ডিজি মেজর জেনারেল শাকিল কেবল দরবার হলের বাইরে পা বাড়িয়েছেন।এমন সময় হলের চারজন সৈনিক ডিজির সম্মুখে লাফিয়ে দাঁড়ায়। সবার মুখে কাপড়, মাথায় হলুদ রঙের হেলমেট, খুব সম্ভবত এগুলো গলফ ক্লাবে ব্যবহৃত হেলমেট। ওই চারজনই প্রথমে ডিজিকে লক্ষ্য করে গুলি করে। ডিজি সঙ্গে সঙ্গে ডান দিকে হেলে মাটিতে পড়ে গেলেন। তখন সময় আনুমানিক ১০টা ৩৮ মিনিট। কর্মকর্তারা ডিজিকে ধরার জন্য সামনে এগোতে চেষ্টা করলে সৈনিকেরা চিৎকার করে বলে, ‘কেউ সামনে আসবে না।’ তখন আসনে থেকে আরও সাত-আটজন সৈনিক এসে কর্মকর্তাদের দিকে গুলি শুরু করে........ ভয়ংকর নৃশংসতার শিকার হয়ে প্রান হারান ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। কিভাবে নৃশংস হত্যাকান্ডের সূত্রপাত ? অনেক প্রশ্নের জবাব জানাতেই এই গ্রন্থ.........
সূচিপত্র *সেনা তদন্ত আদালতের রিপোর্ট *গুলি আর রক্তের স্রোত *দরবার হলে কী ঘটেছিল একজন প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য..... *বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে *অবশেষে আত্মসমর্পণ *মুক্তির পর শিশুদের প্রথম জিজ্ঞাসা ‘আব্বু কোথায়?’ *নর্দমায় মিলল ছয় মিডিয়ার কর্মকর্তার লাশ *৪১ সেনা কর্মকর্তার জানাজা *সেনাবাহিনী সরকারের অনুগত, গুজব ছড়াবেন না সেনাপ্রধান মইন উ *আহমেদ *সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক আমি তোমদের সামনে জীবন্ত *সান্ত্বনা *বিডিআর বিদ্রোহ দমনে রাজনৈতিক সমাধানে যৌক্তিকতা *বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অফিসারদের সর্বজনবিদিত ভাবমূর্তি *পিলখানায় নিহত সেনাসদ্যদের জীবনবৃত্তান্ত *সংসদে বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে আলোচনা *মাননীয় সদস্য মীর্জা আজম *জনাব জাহাঙ্গীর কবির নানক *মাননীয় সদস্য জনাব শেখ ফজলুল করিম সেলিম *মাননীয় সদস্য জনাব হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ *মাননীয় বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া *মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা
হুমায়ূন আহমেদ
কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে ‘নন্দিত নরকের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ। এই উপন্যাসে নিম্নমধ্যবিত্ত এক পরিবারের যাপিত জীবনের আনন্দ-বেদনা, স্বপ্ন, মর্মান্তিক ট্রাজেডি মূর্ত হয়ে উঠেছে। নগরজীবনের পটভূমিতেই তাঁর অধিকাংশ উপন্যাস রচিত। তবে গ্রামীণ জীবনের চিত্রও গভীর মমতায় তুলে ধরেছেন এই কথাশিল্পী। এর উজ্জ্বল উদাহরণ অচিনপুর ফেরা মধ্যাহ্ন মুক্তিযুদ্ধ বারবার তাঁর লেখায় ফুঠে উঠেছে। এই কথার উজ্জ্বল স্বাক্ষর জোছনা ও জননীর গল্প ১৯৭১ আগুনের পরশমণি শ্যামল ছায়া নির্বাসন প্রভৃতি। উপন্যাস গৌরীপুর জংশন যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ চাঁদের আলােয় কয়েকজন যুবক'-এ জীবন ও চারপাশকে দেখার ভিন্ন দৃষ্টিকোণ মূর্ত হয়ে উঠেছে ‘বাদশা নামদার’ ও ‘মাতাল হাওয়ায় । অতীত ও নিকট-অতীতের রাজরাজড়া ও সাধারণ মানুষের গল্প ইতিহাস থেকে উঠে এসেছে। গল্পকার হিসেবেও হুমায়ূন আহমেদ ভিন্ন দ্যুতিতে উদ্ভাসিত। ভ্রমণকাহিনি, রূপকথা, শিশুতােষ, কল্পবিজ্ঞান, আত্মজৈবনিক, কলামসহ সাহিত্যের বহু শাখায় তাঁর বিচরণ ও সিদ্ধি।
হুমায়ুন আহমেদের জন্ম ১৩ নভেম্বর ১৯৪৮ এবং মৃত্যু ১৯ জুলাই ২০১২।