বাংলাদেশে বাংলা ভাষায় এখন সায়েন্স ফিকশান লিখছেন অনেকে। তাদের পুরােধা হলেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল। বলতে গেলে এক হাতে সাহিত্যের এই ধারাটিকে বাংলাভাষায় গ্রহণযােগ্য এবং জনপ্রিয় করেছেন এই লেখক।
বিশ্বসাহিত্যের দিকে তাকালে দেখা যায়, আদিপর্ব থেকেই দুই ধরনের সায়েন্স ফিকশান লিখছেন লেখকরা। জুল ভেন ধারা এবং এইচ. জি. ওয়েলসের ধারা বলা যায়। জুল ভেন ধারার লেখকদের ফিকশানে বিজ্ঞান থাকে বিজ্ঞানসম্মতভাবে। বৈজ্ঞানিক তথ্য উপাত্ত থাকে। অন্যদিকে ওয়েলস ধারার ফিকশান লেখকরা বিজ্ঞানের ধার ধারেন না অতটা। বিজ্ঞানের মােড়কে এরা আসলে লেখেন লাগামছাড়া বিজ্ঞানভিত্তিক রূপকথা। সায়েন্স ফিকশান না, সায়েন্স ফ্যান্টাসি এসব। কমিক সুপার হিরােদের কাহিনির মতাে।
মুহম্মদ জাফর ইকবাল নিজে বিজ্ঞানী, অধ্যাপক। আটঘাটের সুলুক সন্ধান রাখেন বিজ্ঞানের। সায়েন্স ফ্যান্টাসি না, তিনি লেখেন সায়েন্স ফিকশান । জুল ভেন ধারার লেখক বলা যায় তাঁকে। শুরু কপােট্রনিক সুখদুঃখ’ দিয়ে, ইতােমধ্যে প্রায় পঞ্চাশটির মতাে সায়েন্স ফিকশান তিনি লিখেছেন। মুদ্রণের পর মুদ্রণ হয় তাঁর বইয়ের। পাঠক, সব বয়সের মানুষ। সহজ এবং টানটান গদ্য। রােমাঞ্চকর বর্ণনাভঙ্গি। কল্পনা আর বিজ্ঞানকে একাকার করে দেওয়ার আশ্চর্য ক্ষমতা রাখেন এই লেখক। সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা যদি তাঁর কোনাে সায়েন্স ফিকশান পড়তেন, নিশ্চিত বলতেন, ‘আনপুটডাউনেবল! বাংলা ভাষাভাষী ফিকশান পাঠক অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন তার নতুন সায়েন্স ফিকশানের জন্য। বাংলা ভাষার আর কোনাে সায়েন্স। ফিকশান লেখকই তাঁর মতাে এতটা জনপ্রিয় হতে পারেননি।
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
মুহম্মদ জাফর ইকবাল জন্ম : ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫২, সিলেট। বাবা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ফয়জুর রহমান আহমদ এবং মা আয়েশা আখতার খাতুন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, পিএইচডি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটন থেকে। ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এবং বেল কমিউনিকেশান্স রিসার্চে বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করে সুদীর্ঘ আঠার বছর পর দেশে ফিরে দীর্ঘদিন অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছেন। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্ত্রী প্রফেসর ড. ইয়াসমীন হক, পুত্র নাবিল এবং কন্যা ইয়েশিম।