

আত্মনিয়ন্ত্রন (পেপারব্যাক)
আত্মনিয়ন্ত্রণ যে একটা কঠিন কাজ তা আমরা একটু আঁচ করতে পারবো " আত্মনিয়ন্ত্রণ কঠিন কর্ম" অধ্যায়ে। মানুষের নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ করতে হবে তা কিভাবে কেমন করে তা এখানে আলোচনা করা হয়েছে। মানুষের রাগ, হিংসা এসব কিছু নিয়ন্ত্রণে আনা উচিৎ এসব কিছুর কারণে মানুষ হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে মনষত্ব্যহীন হয়ে যায়। তাই বলবো বইটি আমাদের পড়া উচিৎ। সুন্দর একটা বই।
আত্মশুদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ হলো আত্মনিয়ন্ত্রণ। মহান আল্লাহ্ মানুষকে দুই ধরনের শক্তি দিয়েছেন। একটি হলো কোনো কাজে অগ্রসর হওয়ার শক্তি, আর অপরটি হলো কোনো কাজ থেকে বিরত থাকার শক্তি। মূলত বিরত থাকার শক্তিকে কাজে লাগিয়ে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকাই হলো আত্মনিয়ন্ত্রণ। এই বিষয়ে আমার পড়া সর্বপ্রথম বই হলো আরববিশ্বের বিখ্যাত একজন আলেম শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল মুনাজ্জিদ (হাফিজাহুল্লাহ্) রচিত "আত্মনিয়ন্ত্রণ" বইটি। . বইটির বিষয়বস্তুর প্রসঙ্গে আসা যাক। ভূমিকা টানার পরে প্রথম অধ্যায় হলো "আত্মনিয়ন্ত্রণ পরিচিতি"। এখানে আমরা দেখতে পাবো আত্মনিয়ন্ত্রণের সংজ্ঞা, এই ব্যাপারে ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রহঃ)-এর কিছু অমূল্য বাণী এবং দীনদারিতা প্রদর্শন করার পরেও কিছু মানুষ কিভাবে কিছু বিষয়ে আত্মনিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। . আত্মনিয়ন্ত্রণ যে একটা কঠিন কাজ তা আমরা একটু আঁচ করতে পারবো " আত্মনিয়ন্ত্রণ কঠিন কর্ম" অধ্যায়ে। তবে এই অধ্যায়ে এটাও উল্লেখ আছে, কিভাবে একজন মুমিন তার ইমান, তাকওয়া এবং সবরের মাধ্যমে এই কঠিন কাজটি করে থাকে। . আলোচ্য বইয়ের যে অধ্যায়গুলো বইয়ের প্রাণ তথা মূল অংশ, সেগুলোর মাঝে "আত্মনিয়ন্ত্রণে দুর্বল হওয়ার কারণ" একটি। আত্মনিয়ন্ত্রণে দুর্বল হওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। তবে এখানে বিশেষভাবে চারটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে- ১) ইমানের দুর্বলতা, ২) শরয়ি নসের ব্যাপারে অজ্ঞতা, ৩) আত্মার সুরক্ষায় এবং সাধনায় ঘাটতি, এবং ৪) আল্লাহভীতি দুর্বল হওয়া। ."আত্মনিয়ন্ত্রণের প্রকারভেদ"। এই অধ্যায়ে আত্মনিয়ন্ত্রণের দুটি প্রকার বর্ণিত হয়েছে- ১) প্রবৃত্তি প্রতিরোধক আত্মনিয়ন্ত্রণ (যা কামনা-বাসনাতে নিপতিত হতে বাধা প্রদান করে), এবং ২) সন্দেহ-সংশয় প্রতিরোধক আত্মনিয়ন্ত্রণ। এই দুইটি প্রকারের পরিচিতি এবং কিভাবে আমরা প্রবৃত্তি এবং সন্দেহ-সংশয়ের ফিতনা থেকে বাঁচতে পারি এগুলো নিয়ে আলোচিত হয়েছে। . সর্বশেষ অধ্যায় " আত্মনিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা ও শক্তিশালী করার উপায়"। এই অধ্যায়টি সবচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ। এখানে সর্বমোট ১৩ টি উপায় বর্ণনা করা হয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে আমরা আত্মনিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা মজবুত ও শক্তিশালী করতে পারি। . আলোচ্য বইটি বাহ্যিকতার বিচারে, গুণের বিচারে সবদিক দিয়েই মানসম্মত এবং বেশ আকর্ষণীয়। বইটি দেখলে মনে হবে কিনে ফেলি। আর পড়তে শুরু করলে মনে হবে একটানা পড়ে শেষ করে ফেলি।
আত্মনিয়ন্ত্রণ ক্যাটাগরির বই গুলোর মধ্যে এই বইটিকে আমি বেষ্টসেলার বই মনে করি। কেননা বইটিতে ইসলামিক পদ্ধতিতে আত্মশুদ্ধি ও আত্মনিয়ন্ত্রণ অর্জন বিষয়ে ব্যাপক বর্ণনা দেয়া হয়েছে। বইটিতে অনেক মুহাক্কিক, ফকীহবিদ ও মুফাসসির দের বর্ননা উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন ইবনুল কায়্যিম রহিমাহুল্লাহ,ইমাম আয যাওজি, আল্লামা হাজার আসকালানি রহিমাহুল্লাহ এর উক্তি উল্লেখ করা হয়েছে। নিজের আত্মসুদ্ধির জন্য হলেও প্রতিটি মানুষের এই বইটা পড়া উচিত। নিজেদের আত্মনিয়ন্ত্রণ এর জন্য লেখক শাইখ মুহাম্মদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ এর লেখা "আত্মনিয়ন্ত্রণ " বইটা খুব চমৎকার ও উপকারী। লেখক এখানে খুব সুন্দর করে আত্মনিয়ন্ত্রণ এর ব্যাপার টা উল্লেখ করেছে ও গুছিয়ে লিখেছেন। তাই আমি বলব সকলের বইটা পড়া দরকার।
'রাগ উঠলে মাথা ঠিক থাকে না।' 'সমালোচনা আমি নিতে পারি না।' 'একাকী মুহূর্তে দৃষ্টি সংযত রাখতে খুব কষ্ট হয়।'.... সমস্যাগুলো একজন দুজনের নয়। আমরা অনেকেই এসবে ভুগি। নির্দিষ্ট কিছু বিষয় সবার সাথেই ঘটে, যখন আমরা কম-বেশি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি। আর তখনই ঘটে বিপদ। নিজের পাশাপাশি ডেকে আনি অন্যের ক্ষতি। ডিভোর্স, আত্মহত্যা, হারাম কাজে জড়ানো, অভাবে পড়ে চুরি করা, সুদ খাওয়া..ইত্যাদি কাজে জড়িয়ে পড়ি নিয়ন্ত্রণের অভাবে এবং জেনে বুঝে। অতঃপর অনুশোচনায় ভুগি। উম্মাহকে গ্রাস করে রাখা এই করুণ পরিস্থিতি থেকে রক্ষার্থে শায়খ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ রচনা করেছেন 'আত্মনিয়ন্ত্রণ' নামক একটি পুস্তিকা। এতে তিনি আত্মনিয়ন্ত্রণের বাস্তবতা, এর প্রকারভেদ, ক্ষেত্র এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ করার একাধিক পদ্ধতি আলোচনা করেছেন কুরআন হাদীসের আলোকে।
SIMILAR BOOKS
