বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী ফিনিক্স"বইটির প্রথমের কিছু অংশ:
১. প্রভু ক্লড
রিহান আধাে ঘুমের মাঝে অনুভব করল কেউ একজন তার কাঁধে আলতাে ভাবে
স্পর্শ করেছে। মুহূর্তের মাঝে রিহানের ঘুম ভেঙ্গে যায়, স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রটা হাতে ধরে চাপা গলায় জিজ্ঞেস করে, “কে?
মানুষটি নিচু গলায় বলল, “আমি।
রিহান অস্ত্রটি নিচে নামিয়ে রেখে বলল, “ও! তুমি?” মানুষটি তাদেরই একজন, প্রতি রাতে পাহারার ডিউটি ভাগাভাগি করে দেয়। মাঝ রাতে একবার ঘুরে ঘুরে দেখে সবাই ঠিকমতাে তাদের ডিউটি করছে কী না। রিহান অপরাধীর মতাে বলল, “বসে থাকতে থাকতে চোখে ঘুম চলে এসেছিল।মানুষটি উত্তর না দিয়ে নাক দিয়ে এক ধরনের শব্দ করল । রিহান বলল, “আর হবে না, দেখে নিও।” মানুষটি আবার নাক দিয়ে এক ধরনের শব্দ করে বলল, “চল।” রিহান ভয় পাওয়া গলায় বলল, “কোথায়?” “গ্রাউসের কাছে।”
“গ্রাউস!” রিহান চমকে উঠে বলল, “গ্রাউসের কাছে কেন? আমি তােমাকে কথা দিচ্ছি আর কখনাে এরকম হবে না। আমি বসবই না-
“আহ!” মানুষটি হাত তুলে রিহানকে থামিয়ে দিয়ে বলল, “সেজন্য নয়। তুমি ডিউটিতে জেগে আছ না ঘুমিয়ে আছ সেটা নিয়ে গ্রাউস মাথা ঘামায়?”
“তাহলে কী জন্যে ডাকছে?”
“আমি কেমন করে বলব?” মানুষটি হাত নেড়ে বলল, “গ্রাউস আমাকে কখনাে বলবে?”
রিহান অন্যমনস্ক ভাবে মাথা নাড়ল, মানুষটি ঠিকই বলেছে। গ্রাউস তাদের দলপতি, এতজন মানুষের দায়িত্ব তার ওপর। তাদের মতাে ছােটখাটো মানুষের জন্য গ্রাউসের দেখা পাওয়াই একটা কঠিন ব্যাপার। তারপরও সে চেষ্টা করল, জিজ্ঞেস করল, “তুমি সত্যিই জান না কেন ডেকেছে? আন্দাজও করতে পারবে না?” | “না। এখন এটা নিয়ে সময় নষ্ট করাে না। তাড়াতাড়ি চল। গ্রাউস অপেক্ষা করছে।
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
মুহম্মদ জাফর ইকবাল জন্ম : ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫২, সিলেট। বাবা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ফয়জুর রহমান আহমদ এবং মা আয়েশা আখতার খাতুন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, পিএইচডি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটন থেকে। ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এবং বেল কমিউনিকেশান্স রিসার্চে বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করে সুদীর্ঘ আঠার বছর পর দেশে ফিরে দীর্ঘদিন অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছেন। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্ত্রী প্রফেসর ড. ইয়াসমীন হক, পুত্র নাবিল এবং কন্যা ইয়েশিম।