দানবকাল রাজনৈতিক উপন্যাস, যাতে বিম্বিত হয়েছে বিগত কয় বছরের দৈশিক চালচিত্র। এ কালপর্বে দেশে স্থূল উন্নয়ন উল্লম্ফনের বিপরীতে ছিল পতন কিংবা অধঃপতন। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, নিদারুণ দারিদ্র্য ও বৈষম্যের উল্টোপিঠে দেখা যায় নেতাদের ভোগবিলাস, দুর্নীতি, অসৎ-বুভুক্ষু ব্যবসায়ীদের দ্বারা ভূমি লুণ্ঠন ও প্রকৃতির ধ্বংসলীলা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল তরুণ-তরুণী ‘রফিক ভাই’-এর প্রচ্ছায়ায় মেতে ওঠে ডিসকোর্সে। তাদের জটিল তত্ত্বালোচনার মিশেল হয় কৌতুক ও বিদ্রুপ, তারা গল্পচ্ছলে সক্রেটিস-গ্রামসি-আলথুসারকে দেখে নিজেদের মতো করে। বন্ধুদের ধারালো সঙ্গিনে চলে উপনিবেশ, প্রযুক্তি, অপরাজনীতি-অর্থনীতি, আমলাতন্ত্রের অ্যামপিউটেশন।
হাজার বছরের পলিভ‚মিতে অনিক বাঁচিয়ে রাখে কৃষির স্বপ্নকে। ক্রমেই শহর, গাঁও-গেরাম অচেনা হতে থাকে, নেমে আসে একদল দানব, যারা দাঁড়িয়ে যায় জনগণের প্রতিপক্ষে। বাহ্যত বিমর্ষ থাকলেও মানুষ অন্তরে অপেক্ষা করে একটি বসন্তকালের। সে বসন্ত আনে এক অভ্যুত্থান। নতুন একটি প্রজন্ম উদিত হয় সমাজ-রাজনীতির দিকচক্রবালে। তথাপি অনিক-সুমনাদের উৎকণ্ঠা কাটে না। উঁকি দিয়ে যায় ভবিষ্যত দানবের মুখ, নিবিড় খোয়াব হতে চায় দুঃস্বপ্ন। দর্শন, ভিশন ও জাগরণ-বয়ানে যাই থাক, কৃষিই একদা লাঙলের ফলায় ছিঁড়েখুড়ে তৈরি করবে আগামীর পথ।