‘তুই বড় হইয়া মানুষ হইছ্ বাপজান।’ মানুষ কী হতে পেরেছে পলাশ? সে ডায়েরিটা খুলে বসে চোখের সামনে, পাতা উলটায়। কত কত নাম এখানে। গত বিশ বছরের জমানো সম্পদ! আজ এখানে লিপিবদ্ধ হবে আরেকটি নাম। কিন্তু, নামটা এখন মনে আসছে না কেন? কিছুক্ষণ মাথা চাপড়ায় পলাশ। ইদানীং মানুষের নাম মনে থাকে না ওর। ডাক্তার দেখাতে হবে। মানসিক ডাক্তার। পলাশের মনে হয় একদিন সে সবকিছু ভুলে যাবে। ভুলে যাবে নিজের নাম, পরিচয়। মায়ের চেহারা, বাপজানের চেহারা। সব ভুলে গেলে একটা মানুষ কীভাবে বাঁচে!
টিভি চালু। পলাশ বসে আছে টিভির সামনে। একটা নিউজ স্ক্রল হচ্ছে বারবার, ‘আবারও হেয়ার কালেক্টর! এবার অজ্ঞাতনামা নারীর খ-িত লাশ পাওয়া গেছে মধুবাগ জামে মসজিদের সামনে।’ এই নিউজটা সকাল থেকেই চলছে সব চ্যানেলে। টিভিটা বন্ধ করে মুচকি হাসল পলাশ, তারপর স্মৃতিতে ডুব দিল আবার... লইস্কার বিল থেকে বাপজানের হাত ধরে বাড়ি ফিরছিল সে। পথে হাঁটতে হাঁটতে জিজ্ঞেস করেছিল, ‘বাপজান, কও তো মানুষের সবচেয়ে সুন্দর জিনিস কী?’
ছেলের এই আচমকা প্রশ্নে দ্বিধায় ভোগে সহজ-সরল রহমত মিয়া। দাড়িতে হাত বুলিয়ে বলে, ‘কইতে পারি না বাজান।’ পলাশ তখন হেসে দিয়ে বলেছিল, ‘চুল বাপজান। চুল।’
মনোয়ারুল ইসলাম
মনােয়ারুল ইসলাম
মানুষের জীবনে কতগুলাে অধ্যায় থাকে, গল্প থাকে। আবার কিছু কথা থাকে যা গল্পের চেয়ে বেশি কিছু সেসব জায়গায় সত্য আর মিথ্যা পাশাপাশি অবস্থান করে। এসব গল্প, কথা, অধ্যায়গুলাে লিখে যেতে চাই নিজের সাধ্যমত । সত্য, মিথ্যা, ভালোলাগা, সমালােচনা, আলোচনা সব পাঠকের কাছে। লেখক হিসেবে শুধু আমার সামথ্যটক আমৃত্যু তুলে দিতে চাই কলম আর কী-বাের্ডের ছােয়াতে।। মনােয়ারুল ইসলাম জন্ম ১৬ ডিসেম্বর, ব্রাহ্মনবাড়িয়া। প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ – ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভাষায় অভিধান web.facebook.com/monowarul islam.14