লেখক যদিও এ বইটিকে ইংরেজি ব্যাকরণ আখ্যায়িত করতে চান না, তবু এটি যে এ দেশে লিখিত ইংরেজি ব্যাকরণের চাইতেও বেশি কিছু, তা সহজেই অনুমেয়। বইটি এক অর্থে অনন্য এজন্য যে এতে বিদেশি ভাষা হিসাবে ইংরেজি ভাষা শিক্ষায় আগ্রহী একজন বাঙালি শিক্ষার্থীর দুর্বলতাগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ইংরেজি ব্যাকরণও আছে অনেক, কিন্তু এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে বাঙালি শিক্ষার্থীর মাতৃভাষাজাত প্রতিবন্ধকতাগুলোকে পরিষ্কার আলোতে নিয়ে আসা যাতে সে এ সম্পর্কে সজাগ হতে পারে এবং ত্রুটিগুলোকে শুধরে নিতে পারে। অন্য একটি জিনিস যা এ বইটি বাঙালি শিক্ষার্থীর সামনে তুলে ধরে তা হচ্ছে ইংরেজি ভাষাভাষীদের সংস্কৃতি যার সঙ্গে ভাষা এবং তার অর্থের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। আমাদের স্কুল-কলেজের শিক্ষা পদ্ধতির সবচেয়ে দুঃখজনক দিক হচ্ছে যে এ সব ছাত্র/ছাত্রীর এত বছর ইংরেজি শিক্ষার পরও ইংরেজিতে সহজ বাক্য শুদ্ধ করে লিখতে পারেন না। কোচিং সেন্টারে যান, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সেখানে তারাও সেই পুরানো আমলের ব্যাকরণ-অনুবাদ মেথড কিংবা এমসিকিউ মুখস্থ করা ছাড়া আর কোনো নির্দেশনা দিতে পারেন না। ফলে তাতে তারা আপন দক্ষতায় সহজ ইংরেজি বাক্য লেখার বিদ্যা আয়ত্ত করতে পারেন না। ইংরেজি ভাষা ও সংস্কৃতি শিখতে হলে কেবল ব্যাকরণের সূত্র মুখস্থ করলেই চলবে না। এ বইটি শিক্ষার্থীদের একদিকে তাদের নিজেদের দুর্বলতাগুলো সম্পর্কে সজাগ করে তুলবে, অন্যদিকে তাদের কীভাবে ইংরেজি শিক্ষায় অগ্রসব হতে হবে সে সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেবে। এ বইটি শিক্ষকদের পক্ষেও তাদের শিক্ষাদান পদ্ধতির আধুনিকায়নে সহায়ক হবে।
এম. হারুনুর রশীদ
মোহাম্মদ হারু-উর-রশিদের জন্ম ১৯৩৯ সালের ২৮শে ডিসেম্বর আসামের তিনসুকিয়া শহরে। পিতা : রহিম উদ্দিন আহমদ, মাতা : সালমা খাতুন। পৈতৃক নিবাস : ব্রাক্ষণবাড়িয়া। ব্রাক্ষণবাড়িয়ার অন্নদা মডেল হাইস্কুল থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৫৭ সালে আইএ পাস করেন ব্রাক্ষণবাড়িয়া কলেজ থেকে মেধাতালিকায় পঞ্চম স্থান অধিকার করে। ১৯৬০ সালে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স সমেত বিএ পাস করেন, ১৯৬১ সালে এমএন দুই-ই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ১৯৬৪ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন ইংরেজি সাহিত্যে। ১৯৬৬ সালে ট্রাইপস পরীক্ষায় অনার্সসহ উত্তীর্ণ হন। ১৯৭০ সালে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। অধ্যাপনা বৃত্তিতেই জীবন কাটিয়েছেন। সরকারি বিভিন্ন কলেজ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ছিলেন পাঁচ বছর। বর্তমানে নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে প্রফেসর হিসেবে কর্মরত। একই সঙ্গে তিনি বাংলা একাডেমির সভাপতি। মাঝে দু’বছর (১৯৯৯-২০০০) তিনি বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি ছিলেন। প্রফেসর মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ ১৯৭৬ সালে মার্কিন সরকারের বৃত্তি লাভ করে হাওয়াই-এর ইস্ট ওয়েস্ট সেন্টারে ইংরেজি শিক্ষা ও ভাষাবিজ্ঞানে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ১৯৮৮ সালে ইন্টারন্যাশনাল ভিজিটর্স প্রোগ্রামে আমেরিকায় যান এবং সেখানকার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসন সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করেন। ১৯৮৪ সালে প্রফেসর মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ ফ্রান্সের নান্তে আন্তর্জাতিক ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি সার্ভিসের সাধারণ সভায় সভাপতি নির্বাচিত হন। দুই বছর এই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।