ইতিহাসের একটা অদ্ভুত ‘নিয়ম’ আছে। বিশেষ করে উনবিংশ, বিংশ এবং একবিংশ শতকের প্রেক্ষাপটে। যেমন দুই থেকে আড়াই দশক পর পর ইতিহাস নিজেকে ‘রিফর্ম’ করে নেয়, বা সাদামাটা অর্থে একটা অদল-বদল ঘটে। যেমন ১৯১৭ সালে বলশেভিক বিপ্লবের আড়াই দশক পর বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে উঠল। এই প্লাবন শেষ হওয়ার আরও আড়াই দশকের মধ্যে সমাজতন্ত্রের মূলনীতি ত্যাগ করল ক্রুশ্চেভ। সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য সমাজতান্ত্রিক দেশও। এরও আড়াই দশক পর সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গেল। ১৯৯০-এ পর দুই থেকে আড়াই দশক পর, অর্থাৎ ২০১৪-২০১৫ সালের দিক থেকে বিশ্বে আবারও সমাজতন্ত্র তথা বামপন্থী জোয়ার আসতে শুরু করল। ভারতবর্ষের উদাহরণ আরও প্রাসঙ্গিক। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার ওই দুই দশক পর সারা ভারত কেঁপে উঠল নকশাবাড়ি কৃষক অভ্যুত্থানের দাবানলে। ভারতবর্ষের মানুষ শৃঙ্খলমুক্তির পুরোনো স্বপ্নটাকে নতুন করে দেখতে শুরু করল। আবার ভারতবর্ষের স্বাধীনতার আড়াই দশক পরেই পাকিস্তানের উপনিবেশিক জোঁয়াল ভেঙে স্বাধীন হলো বাংলাদেশ।
মনজুরুল হক
সাধারণ অর্থে লেখক পরিচিতির ভেতর যেমন বেশ ওজনদার একটা ব্যাপার থাকে আমার ক্ষেত্রে সে সবের বালাই নেই। খুলনা জেলার একটি গ্রামে সাধারণ আর দশ জনের মতাে সাধারণ পরিবারে জন্ম। বাবা-মায়ের থাকতে পারে, তবে আমার বিশাল কিছু হবার স্বপ্নটপ্ন ছিল না । জন্মের পর ঊনপঞ্চাশটি বছর পার হয়ে গেছে। কী করেছি আর কী করতে পারিনি তারও কোনাে খাতওয়ারি পরিসংখ্যান নেই। স্বপ্ন না থাকলেও ইচ্ছা ছিল, আর সেই ইচ্ছাটি অঙ্কুরিত হয়েছিল ঘুড়ি ওড়ানাের, লাটিম ঘােরানাের বয়সে চরম বাস্তবতায়। মুক্তিযুদ্ধে আমার সহযােদ্ধা বাবা গত হয়েছেন। আছেন মা, চার ভাই বােন, স্ত্রী আর ফুটফুটে দুটি কন্যা। বিকলাঙ্গ ক্ষয়ে যাওয়া সমাজটাকে আমূল বদলে দেয়ার যে ব্রত কৈশােরে-যৌবনে পাগলা ঘােড়ার মতাে দাবড়ে ফিরেছে, আজও সেই ছুটে চলা থেমে যায়নি। আজও বুকের গভীরে সযতনে লালিত সেই ভেঙেচুরে নতুন নির্মাণের সুতীব্র বাসনা। আস্থায় মাটি ও মানুষ চেতনায় মাকর্সবাদ ধারণ করে এখনাে স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখি-একদিন ঠিক পেরে যাব।
Title :
সমাজতান্ত্রিক আদর্শের পুনরুত্থান (পেপারব্যাক)