ফ্ল্যাপে লিখা কথা স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে যেসব সমস্যা জনজীবনকে বিপর্যস্ত করেছে, সেগুলোরই বিচার বিশ্লেষণ আছে এ গ্রন্থে। ড. জাফর ইকবাল সহজ ভাষায় বিচার করেছেন বাংলাদেশের জাতীয় সংস্কৃতি ও রাজনীতির নানা সমস্যা।দেশের শিক্ষব্যবস্থা নিয়েও তিনি গভীরভাবে চিন্তা করেছেন এবং প্রচলিত ব্যবস্থার ত্রুটি-বিচ্যুতি নির্দেশ করেছেন। শিক্ষা,সংস্কৃতি ও সমাজের পুনর্গঠন তাঁর কাম্য।
আরো একটি বিজয় চাই তিনি কামনা করেছেন এই জন্য যে, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পরে অল্প সময়ের মধ্যেই রাষ্ট্রীয় জীবনের কর্তৃত্বে চলে এসেছে একাত্তরের পরাজিত ও ঘৃণিত শক্তি। ড. জাফর ইকবাল পরাজিত শক্তির এই উত্থানের মোকাবিলা করত চেয়েছেন মূলত সাংস্কৃতিক আন্দোলনের ধারায়।
লেখকের সাবলীল ভাষা পরিচ্ছন্ন চিন্তা পাঠককে এমনভাবে আকর্ষণ করে যে , পড়তে আরম্ভ করলে একটির পর একটি করে সবগুলো লেখা পড়ে শেষ করতে ইচ্ছে করে। লেখকের সাথে আমারাও বিশ্বাস করি জাতির জন্য আরো একটি বিজয় অবশ্যম্ভাবী। ফয়সাল আরেফিন দীপন
ভূমিকা আমার ধারণা আমাদের দেশটি এই মুহূর্তে একটা বড় ধরনের দুঃসময়ের ভিতর দিয়ে যাচ্ছে। যে প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমরা দেশের ভিত্তি হিসেবে ধরি দেখা যাচ্ছে তার সবগুলোই একটা একটা করে ধ্বংস করে দেবার চেষ্টা করা হচ্ছে। যেটি এখনো কোনোভাবে টিকে আছে সেটি হচ্ছে সংবাদপত্র-তার ওপর দিয়েও ঝড় ঝাপটা কম যাচ্ছে না। সেই সংবাদপত্রে গত বছরে আমার প্রকাশিত লেখালেখি, প্রবন্ধ এবং কলামগুলো নিয়ে প্রকাশিত হচ্ছে ‘আরো একটি বিজয় চাই’।
লেখাগুলো সংকলিত করতে গিয়ে আমি একটু অবাক হয়ে লক্ষ করেছি অনেকগুলো লেখা শিক্ষা নিয়ে। বেশির ভাগই ক্ষোভ -পরীক্ষার দিনে হরতাল দেওয়া নিয়ে ক্ষোভ, ছোট শিশুকে শাস্তি দিতে গিয়ে মেরে ফেলা নিয়ে ক্ষোভ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হত্যা নিয়ে ক্ষোভ, বিজ্ঞান শিক্ষা নিয়ে ক্ষোভ একং সবশেষে ‘একমুখী শিক্ষা’ নামে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করা নিয়ে ক্ষোভ! ক্ষোভের আর শেষ নেই- তবু আমি মনে করি হতাশা থেকে ক্ষোভ ভাল।হতাশা হলে মানুষ হাল ছেড়ে দেয়- বিক্ষুব্ধ মানুষ প্রতিকারের চেষ্টা করে।
আমি নিজে শিক্ষক বলে সম্ভবত অন্য দশটি বিষয়ের মাঝে শিক্ষার বিষয়টাই আমার প্রথমে চোখ পড়ে। আমাদের দেশটাকে নিজের পায়ের উপর দাঁড়া করতে হলে আগে হোক পরে হোক, শিক্ষার বিষয়টাকে সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দিয়ে নিতে হবে। তাই শিক্ষাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতে দেখলে আমার ক্ষোভটা হয় বেশী। যখন পত্রিকায় লেখাগুলো প্রকাশিত হয়েছে তখন পাঠক পাঠিকারা আমর ক্ষোভটুকু অনুভব করেছেন-সেটাই আমার বড় পাওনা। মুহম্মদ জাফর ইকবাল বনানী, ঢাকা।
সূচিপত্র * এটি কিন্তু স্বাভাবিক নয় * কেন আমরা হতাশ নই * কিশোরী মুক্তিযোদ্ধা * বেনানা রিপাবলিক কাহাকে বলে ? * বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা : বর্তমান ও ভবিষ্যৎ * তোমাদের কাছে ক্ষমা চাই * বিজ্ঞান গবেষণা এবং প্রশ্ন * বিচার ,অবিচার ,সুবিচার * মাফ করে দিও দীপু * একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অপমৃত্যু * একটি কাল্পনিক গল্প * মাগুড়ছড়া, টেংরটিলা এবং এসএসসি সিলেবাস * এ দেশে জঙ্গি কারা ? * একমুখী শিক্ষা : জাতির জন্য আশা না আশংকা * নীলনকশার খেলোয়াড় ও গুটি * নির্বুদ্ধিতার জন্য একটা পুরস্কার দরকার! * আরো একটি বিজয় চাই
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
মুহম্মদ জাফর ইকবাল জন্ম : ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫২, সিলেট। বাবা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ফয়জুর রহমান আহমদ এবং মা আয়েশা আখতার খাতুন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, পিএইচডি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটন থেকে। ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এবং বেল কমিউনিকেশান্স রিসার্চে বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করে সুদীর্ঘ আঠার বছর পর দেশে ফিরে দীর্ঘদিন অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছেন। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্ত্রী প্রফেসর ড. ইয়াসমীন হক, পুত্র নাবিল এবং কন্যা ইয়েশিম।