ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ বিশ্বসাহিত্যের কালজয়ী প্রতিভা নাহিব মাহফুজের জন্ম (১৯৯১-২০০৯) মিশরের কায়রো শহরে। আরবি ভাষায় একমাত্র নোবেল বিজয়ী লেখক, বহুমুখী প্রতিভার অধিকার , নাগিব মাহফুজের রচনার সঙ্গে বাংলা ভাষাভাষী পাঠকের পরিচয় কবীর চৌধুরীর অনূদিত কালজয়ী এই উপন্যাসটির মাধ্যমে নিবিড়ভাবে পরিচিত হবে। নাগিব মাহফুজ তার রচনায় অতীত ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্তিবাদী , মৌলবাদবিরোধী , উদার মানবিক মূল্যবোধ সমন্বয় ঘটিয়েছেন আকর্ষনীয়ভাবে। এখন তিনি বিশ্বসাহিত্যের অঙ্গনে সগৌরবে প্রতিষ্ঠিত। ‘ওয়েডিং সঙ’ উপন্যাসে আমরা দেখি কাল কীভাবে কত রকম ভয়ঙ্কর রূপান্তর সাধন করে। প্রেম রূপান্তরিত হয় ঘৃণায়, সুন্দর হয়ে ওঠে কুৎসিত, বিশ্বস্ততা ও আনুগত্যের জায়গায় দেখা যায় বিশ্বাসঘাতকতা ও প্রবঞ্চনা, , আদর্শবাদরে জায়গায় লাম্পট্য । এই উপন্যাসটি গড়ে উঠেছে থিয়েটারের জগৎ নিয়ে। নাগিব মাহফুজের সব উপন্যাসে কাল একটা গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করে। তাঁর চরিত্ররা সব সময় কাল নিয়ে ভাবে। আরবি সাহিত্যের ধ্রুপদী লেখক নাগিব মাহফুজের ‘ওয়েডিং সঙ’ এর কবীর চৌধুরীকৃত বাংলা অনুবাদ বাসরগীতি বাংলা অনুবাদ সাহিত্যে স্থায়ীসম্পদরূপে বিবেচিত হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
নাগিব মাহফুজ
কবীর চৌধুরী
কবীর চৌধুরী (জন্ম ১৯২৩)। বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় অনুবাদক, প্রাবন্ধিক, শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক কর্মী ও সুশীল সমাজের অগ্রণী ব্যক্তিত্ব। দেশ-বিদেশের নাটক ও কথাসাহিত্য, পাশ্চাত্যের চিত্রকলা ও চিত্রশিল্পী এবং স্বদেশের সমাজ ও সংস্কৃতির বিষয় নিয়ে রচিত তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা দেড় শতাধিক । তিনি ইংরেজি, আমেরিকান, ফরাসি, জার্মান, রুশ ও বুলগেরিয়ানসহ বিভিন্ন ভাষায় অনেক শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকর্ম বাংলায় এবং বাংলা ভাষায় অনেক শ্রেষ্ঠ উপন্যাস, ছােটগল্প, কবিতা এবং নাটক বিশেষ দক্ষতার সঙ্গে ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন । কবীর চৌধুরী বাংলাদেশের বিভিন্ন কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক রূপে দীর্ঘকাল কাজ করেছেন । তাছাড়া তিনি বাংলা একাডেমীর প্রধান, কুদরাত-এ-ক্ষুদা শিক্ষা কমিশন তথা বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় শিক্ষা কমিশনের সদস্য-সচিব এবং বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সচিব রূপে কৃতিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করেন । সাহিত্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি ক্ষেত্রে অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমী, একুশে ও স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার এবং ভারতের উইলিয়াম কেরী পুরস্কারে ভূষিত হওয়া ছাড়াও বহু সংস্থা কর্তৃক সম্মানিত হয়েছেন । ১৯৯৮ সালে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় অধ্যাপক পদে ব্রত হন ।। ৮৭ বছর বয়সেও তিনি ক্লান্তিহীনভাবে লিখে চলেছেন এবং প্রগতিবাদী সাংস্কৃতিক সামাজিক কাজে সক্রিয় রয়েছেন ।