ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ লেখার অনেক আগে মানুষের কথার সৃষ্টি। যে মানুষটা লেখাপড়া শেখার সুযোগ পায়নি সেও কথা বলে, কথায় গুছি দেয় এবং ছত্রে বা ছন্দে কথা বাঁধে। এই গ্রন্থের বৃহদাংশ সেই বাক্প্রিয় বাংলাভাষীর, যাদের চতুর্থাংশের আজও অক্ষর-পরিচয় হল না। শব্দচয়নে বা বাক্ভঙ্গিতে তাঁরা অশিক্ষিত পটুত্ব, প্রজ্ঞা ও রসবোধের যে পরিচয় দিয়েছেন তা যে-কোনো কৌতূহলী মনে বিস্ময়ের উদ্রেক করে ও আনন্দ দেয়। প্রবাদ ও প্রবচন আমাদের দীর্ঘ-অভিজ্ঞতার অভিব্যক্ত। পৃথিবীর প্রায় সব ভাষাতেই প্রবাদ ও প্রবচন আছে। প্রবাদ ও প্রবচন একটি জাতির জাতীয়-সংস্কৃতির সূক্ষ্ণ কিছু সংকেত জানান দেয়। বাঙালির নিজস্ব কথনভঙ্গি ধরা পড়ে বচর ও প্রবচনে। সাহিত্যের উচ্চতরস্থানে প্রবাদ ও প্রবচনের স্থান খুব অল্প হলেও নতুন করে এই অনির্দিষ্ট রচয়িতাদের লোকজ-লিরিক সাহিত্যের মূল্যায়নের সময় এসেছে। মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান তাঁর নির্মাণ করেছেন। তিনি বাংলা প্রবাদ ও প্রবচনকে এমন একটি পূর্ণাঙ্গ রূপ দিয়েছেন যা অভূতপূর্ব।
বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান
মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান(৩ ডিসেম্বর ১৯২৮ - ১১ জানুয়ারি ২০১৪ ) ২০০৭ সালে একুশে পদক এবং ১৯৮৪ সালে বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। তিনি বাংলা একাডেমী ও এশিয়াটিক সােসাইটি অব বাংলাদেশ-এর একজন ফেলাে। তিনি লিঙ্কনস্ ইন-এর অনারারি বেঞ্চার এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উরষ্টার কলেজের অনারারি ফেলাে। ৬ টি কাব্যগ্রন্থসহ এ পর্যন্ত প্রকাশিত তাঁর গ্রন্থের সংখ্যা ৫৮ টি। তিনি বাংলাভাষার প্রথম ভাব-অভিধান যথাশব্দ-এর রচয়িতা। কোরানসূত্র, গঙ্গাঋদ্ধি থেকে বাংলাদেশ, রবীন্দ্রবাক্যে আর্ট সঙ্গীত ও সাহিত্য, আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, বাংলাদেশের তারিখ, মিত্রাক্ষর : অন্ত্যমিল শব্দকোষ, কোরানশরিফ সরল বঙ্গানুবাদ ইত্যাদি তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ।