কবীর চৌধুরী (জন্ম ১৯২৩)। বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় অনুবাদক, প্রাবন্ধিক, শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক কর্মী ও সুশীল সমাজের অগ্রণী ব্যক্তিত্ব। দেশ-বিদেশের নাটক ও কথাসাহিত্য, পাশ্চাত্যের চিত্রকলা ও চিত্রশিল্পী এবং স্বদেশের সমাজ ও সংস্কৃতির বিষয় নিয়ে রচিত তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা দেড় শতাধিক । তিনি ইংরেজি, আমেরিকান, ফরাসি, জার্মান, রুশ ও বুলগেরিয়ানসহ বিভিন্ন ভাষায় অনেক শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকর্ম বাংলায় এবং বাংলা ভাষায় অনেক শ্রেষ্ঠ উপন্যাস, ছােটগল্প, কবিতা এবং নাটক বিশেষ দক্ষতার সঙ্গে ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন । কবীর চৌধুরী বাংলাদেশের বিভিন্ন কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক রূপে দীর্ঘকাল কাজ করেছেন । তাছাড়া তিনি বাংলা একাডেমীর প্রধান, কুদরাত-এ-ক্ষুদা শিক্ষা কমিশন তথা বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় শিক্ষা কমিশনের সদস্য-সচিব এবং বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সচিব রূপে কৃতিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করেন । সাহিত্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি ক্ষেত্রে অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমী, একুশে ও স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার এবং ভারতের উইলিয়াম কেরী পুরস্কারে ভূষিত হওয়া ছাড়াও বহু সংস্থা কর্তৃক সম্মানিত হয়েছেন । ১৯৯৮ সালে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় অধ্যাপক পদে ব্রত হন ।। ৮৭ বছর বয়সেও তিনি ক্লান্তিহীনভাবে লিখে চলেছেন এবং প্রগতিবাদী সাংস্কৃতিক সামাজিক কাজে সক্রিয় রয়েছেন ।
জাহানারা ইমাম
জন্ম ৩ মে ১৯২৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার সুন্দরপুর গ্রামে। তিনি কলকাতার লেডি ব্রেবাের্ন কলেজ থেকে বি.এ. ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে এম.এ. পাশ করেন। ১৯৬০ সালে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে প্রথম শ্রেণীতে বি.এড. ডিগ্রি অর্জন করেন। ফুলব্রাইট স্কলারশিপ পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় সানডিয়াগাে স্টেট কলেজ থেকে ১৯৬৪ সালে ‘সার্টিফিকেট-ইন-এডুকেশন’ ডিগ্রি অর্জন করেন। শিক্ষিকা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন ময়মনসিংহের বিদ্যাময়ী গার্লস হাই স্কুলে। ঢাকায় সিদ্ধেশ্বরী বালিকা বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন ৮ বছর। ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত ২ বছর টিচার্স ট্রেনিং কলেজে অধ্যাপিকা হিসেবে চাকরি করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষা ইনস্টিটিউটে খণ্ডকালীন প্রভাষক ছিলেন। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে অনুষ্ঠান পরিচালনা করতেন। খেলাধুলা, নাটক, সমাজকল্যাণমূলক বিভিন্ন সমিতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। খাওয়াতীন’ নামে মাসিক পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। দৈনিক বাংলায় কলাম লিখতেন। পৃথিবীর বহুদেশ ভ্রমণ করেছেন।
বাবা : সৈয়দ আব্দুল আলী ব্রিটিশ সরকারের অধীনে ‘বেঙ্গল সিভিল সার্ভিস কর্মকর্তা সাব-ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট
মা : সৈয়দা হামিদা আলী।
স্বামী : শরীফ ইমাম, প্রকৌশলী
পুত্র : শহীদ মুক্তিযােদ্ধা শাফী ইমাম রুমী সাইফ ইমাম জামী।
এই মহীয়সী নারী ২৬ জুন ১৯৯৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন। পুরস্কার : বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ সাহিত্য পুরস্কার-১৯৮৭, কমর মুশতরী সাহিত্য পুরস্কার-১৯৮৮, বাংলা একাডেমী সাহিত্য। পুরস্কার-১৯৯১, নারী গ্রন্থ প্রবর্তনা-১৯৯৪ (ক্রেস্ট), আজকের কাগজ-১৯৯৪ (পদক), গুণীজন সম্মাননা-১৯৯৪ কারমাইকেল। কলেজ প্রাক্তন ছাত্র সমিতি, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ-১৯৯৫ (ক্রেস্ট), স্বাধীনতা পদক-১৯৯৭, বেগম রােকেয়া পদক-১৯৯৮, অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার-২০০১, ইউনিভার্সাল শিল্পগােষ্ঠী-২০০১ (ক্রেস্ট), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ-২০১১ (ক্রেস্ট) লাভ করেন।