কাল বিকেলেও যে জানালায় হেসেছিল কেউ,
সে জানালার রডগুলো এখনো উত্তপ্ত।
আর মানুষটা আজ শূণ্যের ওপার।
কাল যে বারান্দায় উড়েছিল ভেজা কাপড়,
সেই বারান্দায় আজ সকালে-
পাওয়া গেছে একটা পোড়া দেহ।
লাশের গন্ধে ভারী হয়েছে দেয়াল।
ব্যস্ত চুড়িহাট্টা মোড়, কিংবা নন্দকুমার দত্ত সড়ক,
হায়দার মেডিকো, বা তার পাশের সবচে ব্যস্ত হোটেল।
ব্যস্ত গলির জানালাগুলোতে-
অনেক অনেক প্রেমের গল্প ছিল নিশ্চয়।
কিংবা গলির মোড়ের রাজনৈতিক গল্পগুলো..
এক ব্যস্ত জনপদ। এক আশাতীত নিস্তব্ধতা।
সেখানে কেউ পত্রিকা কেনেনি আজ।
তবে সেখানকার খবর জানতে-
পত্রিকা বিক্রি হয়েছে অনেক।
ফাগুনের রঙে রঙিন হয়নি এই চুড়িহাট্টা।
হয়েছে কালো ধোঁয়ায় রুগ্ন। পুড়ে গেছে কত না স্বপ্ন।
নন্দকুমার দত্ত সড়কটাও তাই আজ বড্ড বিষন্ন।
এই মোড়ের দৈনন্দিন চাহিদার কেউ নিচ্ছে না খোঁজ।
সব যেন হঠাৎই নিখোঁজ।
ছোট ছেলের জন্য ওষুধ আর বড়টার জন্য আইসক্রিম।
আগুনের তাপে মুহূর্তেই গলে গেছে ঠান্ডা আইসক্রিম।
বোনের বিয়ের বাজার সেরে-
বাসা পর্যন্ত যেতে পারেনি একমাত্র ছোটভাই।
রিক্সা চালক হারেছ বউকে ফোন দিয়ে বলেছিল-
"রাস্তায় ম্যালা জাম,
পোয়া মাইয়ার লগে তুমিও খাইয়া লও,
আমার আইতে রাইত হইব।"
মিথ্যাবাদী হারেছ বাড়িতে ফেরেনি।
কেউ হয়ত তখন কথা বলছিল প্রিয় মানুষের সাথে।
সারাদিন পর কেউ হয়ত নিশ্চিন্তে খাচ্ছিল হোটেলে।
ব্যস্ত শহরের ব্যস্ত একটা গলিতে-
সেদিন রাতে নিভে গেল অনেক প্রাণ।
এখনকার মৃত্যু একেকটা সংখ্যা মাত্র।
ক্রমেই বাড়ছে।
নন্দকুমার দত্ত সড়কেই পড়ে ছিল ২৬টা প্রাণ।
আহা জীবন, সস্তা জীবন।