ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ ‘ছট’ হতে যদি ছড়া হয়ে, তবে ‘ফট’ থেকে ফড়া, ‘ধট’ হতে ধরা, ‘কট্’ হতে কড়া, ‘মট্’ হতে মড়া হতে দোষ কী? দোষ না হলেও পণ্ডিতজনেরা ফোঁস তো করবেন তা নিশ্চিত। তাতে কিঞ্চিৎ বিস্মিত হব। আমি কিন্তু আমার চিন্তাভাবনা ছড়িয়েই যাব। কেননা ছড়া তো ছড়িয়েই থাকে এবং ছড়িয়ে যাবেও। তা হলে ছড়াকার ছড়াবে না কেন? ছিটাবে না কেন? ছড়া নেয় মেলা কথা। অনেকের গা ঠাণ্ডা, গরম মাথা। ছড়াকারের বিশাল স্বাধীনতা। মনে লাফায় সজীবতা। অনেকের যা তা। অনেকে রাগে দাগায় খাতা। অনেকে আকার শিক ছাড়াই রাখে ছাতা।দেখেন তো কত রকমের কথা। আর বলি না যথা-ছড়া ঠাণ্ডা না ততা? ‘ছড়া হবে সাবলীল জচমকে দেয়া অন্ত্যমিল টইটম্বুর হাওড় বিল দশ দরজা একটা খিল একটা আকাশ বিশটা চিল শান্ত দিঘি ছোট্র ঢিল!’ ছড়া চমচম ছড়া ঝমঝম পড়ে যদি এমন প্রতীতিম মনের গহনে তিরতির, বুদবুদ উৎপাদন করে বা চমচমের মতো মজারু বা চমারু লাগে বা বিষ্টির মতো ঝমঝম আওয়াজ পাওয়া যায় তবেই লেখা সার্থক। নতুবা। ‘ব্যর্থক’।
আলম তালুকদার
আলম তালুকদার, জন্ম ১লা জানুয়ারি ১৯৫৬, টাঙ্গাইলে। শিশুসাহিত্যের প্রায় সব শাখায় তাঁর স্বাভাবিক এবং স্বতঃস্ফূর্ত বিচরণ। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা আশি ছাড়িয়েছে। শুধু শিশুসাহিত্য নয়, রম্যসাহিত্যেও তাঁর মুন্সিয়ানা লক্ষ করা যায়। চাঁদের কাছে জোনাকি ছড়ার বইয়ের জন্য ২০০০ সালে অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। পালক অ্যাওয়ার্ড, জয়নুল আবেদিন পুরস্কার, কাদির নওয়াজ পুরস্কার, স্বাধীনতা পুরস্কার, পদক্ষেপ সাহিত্য পুরস্কার, সাহস পুরস্কার, স্বাধীনতা সংসদ পুরস্কার, পশ্চিমবঙ্গের চোখ সাহিত্য পুরস্কারসহ বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ১৯৭১ সালে তিনি সম্মুখ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধ আমার অহংকার নামে একটি বইও তিনি রচনা করেছেন। আলম তালুকদার দেশের বিভিন্ন পাঠাগারের আজীবন সদস্য। বাংলা একাডেমীর জীবন সদস্য। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের একজন তালিকাভুক্ত গীতিকার। তাঁর একটা মাত্র গিন্নি এবং একটা মাত্র নাতনি। তিনি তিন সন্তানের জনক। তাঁর প্রিয় ছড়ার লাইন- ‘শব্দ ছাড়া হয় না কিছু শব্দ হলো গুণ শব্দে জাগায় ভালোবাসা শব্দ করে খুন’