একাত্তরের মার্চ থেকে বাহাত্তরের জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসের ঘটনাবহুল পর্বটি নিয়ে এ বই। এ পর্বের প্রধান চরিত্র শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর গ্রেপ্তার, বন্দিজীবন, মুক্তি ও দেশে ফিরে এসে কঠিন এক বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়ার আখ্যান এ বইটি। এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের অনেকটাই ছিল অজানা। ১৯৭১ সালের মার্চে পাকিস্তানে সাংবিধানিক গণতন্ত্রের সম্ভাবনা শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়ে। সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। সামরিক সরকার অচল হয়ে যায়। শুরু হয় লোকদেখানো সংলাপ। একপর্যায়ে সেটিও ভেঙে পড়ে। ২৫ মার্চ রাতে বাঙালির ওপর পাকিস্তানের সামরিক অভিযান ও গণহত্যা শুরু হয়। তাত্ক্ষণিকভাবে আরম্ভ হয় বাঙালির প্রতিরোধযুদ্ধ। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে শেখ মুজিব গ্রেপ্তার হন। সংক্ষেপে এটাই এ বইয়ের পটভূমি। শেখ মুজিব পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে লন্ডনে যান বাহাত্তরের ৮ জানুয়ারি। সেখানে ছিলেন ২৬ ঘণ্টা। পেয়েছিলেন রাষ্ট্রপ্রধানের মর্যাদা। ১০ জানুয়ারি তিনি নয়াদিল্লি হয়ে ঢাকায় ফিরে এলে বীরের সম্মান পান। এই সাড়ে ৯ মাসে ঘটে গেছে ইতিহাসের বিরাট পালাবদল। একাত্তরের মার্চ থেকে বাহাত্তরের জানুয়ারি পর্যন্ত ঘটনাবহুল পর্বটি ঘিরে এ বই। এখানে মূল আখ্যান পাঁচটি—শেখ মুজিবের গ্রেপ্তার, বন্দিজীবন ও বিচার, মুক্তি, লন্ডন ও দিল্লিপর্ব এবং দেশে ফিরে এসে কঠিন এক বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়া। গবেষক মহিউদ্দিন আহমদের অনুসন্ধানে এ বইয়ে উঠে এসেছে বাংলাদেশের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ পর্ব, যার অনেক কিছুই এত দিন ছিল অজানা।
মহিউদ্দিন আহমদ
মহিউদ্দিন আহমদ জন্ম ১৯৫২, ঢাকায়। পড়াশােনা গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুল, ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে। ১৯৭০ সালের ডাকসু নির্বাচনে মুহসীন হল ছাত্র সংসদের সহসাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বিএলএফের সদস্য হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। দৈনিক গণকণ্ঠএ কাজ করেছেন প্রতিবেদক ও সহকারী সম্পাদক হিসেবে। দক্ষিণ কোরিয়ার সুংকোংহে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স ইন এনজিও স্টাডিজ কোর্সের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও অধ্যাপক। তার লেখা ও সম্পাদনায় দেশ ও বিদেশ থেকে বেরিয়েছে বাংলা ও ইংরেজিতে লেখা।