অভিবাসনের অদম্য ইচ্ছা নিয়ে একদিন পাড়ি জমান মর্জিনা-ইসমত। পাড়ি জমান আরও অনেকে। তাদের আস্তানা গড়ে ওঠে নিউইর্ক শহরের জ্যাকসন হাইটস-কুইন এলাকায়। যেখানকার রাস্তাঘাটে চলতে ফিরতেও অনেক সময় পথচারীদের বাংলায় কথা বলতে শোনা যায়। যুগ-পরিক্রমায় তাদের প্রজন্ম বাড়ে মিশ্র সংস্কৃতির বেড়াজালে। মুক্তিযোদ্ধা ইসমতের আকস্মিক মৃত্যুতে তমীমা-কামরু হোঁচট খেলেও থামে না তাদের জীবনের গাতি। অভিবাসী সোলমান এক পর্যায়ে সব গুটিয়ে দেশে ফিরে আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ঘনিষ্ঠজনের বৈষয়িক চক্রান্তে বিপর্যস্ত হয়ে তিনি ফিরে আসেন আগের অবস্থানে। তমীমা লেখাপড়া অসমাপ্ত রেখে মিশেলের সাথে চলে যায় অন্য শহরে। কামরুর সহপাঠী প্রেমিকা চন্দ্রিকা একটি মাত্র অব্যর্থ গুলিতে নিহত হয়।... বাংলা কথাসাহিত্যের আধাডজনের উপরে সার্থক উপন্যাস ও দেড় শতরেও বেশি ছোটগল্প উপহার দিয়েছেন রেজাউর রহমান। মুক্তিযুদ্ধের সার্থক উপন্যাস অন্ধকারে নয় মাস ইতোমধ্যে বেশ আলোচিত হয়েছে। অভিবাসীদের নিয়ে ব্যতিক্রমী এই উপন্যাসে পাঠক আলাদা এক স্বাদ পাবেন বলে আশা করছি।
রেজাউর রহমান
রেজাউর রহমান, জন্ম ১৯৪৪ সালে, ঢাকায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জীববিজ্ঞানে এমএসসি করেছেন ১৯৬৫ সালে। রাজশাহী সরকারি ডিগ্রি কলেজে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে পেশাজীবনের শুরু। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে বিজ্ঞান গবেষক হিসেবে ১৯৬৬-২০০২ পর্যন্ত নিয়োজিত ছিলেন। চেক বিজ্ঞান একাডেমি, প্রাগ থেকে ১৯৭৯ সালে কীটতত্ত্বে পিএইচ ডি লাভ করেন। খণ্ডকালীন অধ্যাপনা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বদ্যিালয়ে (১৯৯১-২০০৫)। একশরও বেশি মৌলিক ও জনপ্রিয় বিজ্ঞান প্রবন্ধ লিখেছেন। বংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত তাঁর কীটতত্ত্ব বিষয়ক স্নাতকোত্তর মানের পাঠ্যপুস্তকগুলো যথেষ্ট সমাদৃত হয়েছে। পাশাপাশি তিনি লিখেছেন জনপ্রিয় বিজ্ঞান গ্রন্থও। প্রথাগত নিয়মে অবসরপ্রাপ্ত হলেও শিক্ষকতা-গবেষণা ও বিজ্ঞান আন্দোলন এবং সম্প্রচার কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত। তিনি নিয়মিতভাবে সাহিত্যচর্চায়ও নিবেদিত। সাহিত্যচর্চা করেন স্কুলজীবন থেকে। প্রথম লেখা ছাপা হয় ১৯৬৩ সালে। প্রকাশিত গল্পের সংখ্যা শতাধিক। কয়েকটি উপন্যাসও লিখেছেন।