‘ফড়িংয়ের পিঠে মৃত্যু' মূলত বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের একটি জেলার চিত্র নিয়ে আঞ্চলিক ভাষায় লেখা উপন্যাস। উপন্যাসে উত্তরাঞ্চলের একটি জেলাকে কেন্দ্র করে সেখানের মানুষের ধর্মীয় ও সামাজিক বিশ্বাস, আচার-আচরণ, দৈনন্দিন জীবনযাপন, বিনােদনের মাধ্যম, সংস্কার-কুসংস্কার, খাবারদাবারসহ বিভিন্ন দিক ক্ষুদ্র পরিসরে লেখক তুলে এনেছেন সুনিপুণভাবে। ভূমিকায় লেখক বলেছেন- ‘উপন্যাসটা শেষ করে কারাে কারাে মনে উত্তরাঞ্চল সম্পর্কে বিরূপ ধারণা হতে পারে। এখানে একমত হতে পারিনি। ভালােমন্দ মিলেই মানুষ। বিয়েবাড়িতে কাজলের মতাে সরলমনা মেয়ের বিয়ে ভেঙে যাওয়াটা শুধু উত্তরাঞ্চল কেন সারাবাংলারই চিরায়ত চিত্র। মজিদ আমেনার টানাপােড়েনের জীবনের গল্পের মাঝেও ভালােবাসার বিমূর্ত রূপ, স্বজনের প্রতারণা অথবা মাস্টারের মতাে লােভাতুর চরিত্র লুকিয়ে আছে সারাদেশেরই আনাচেকানাচে। আমেনাকেও দোষ দেয়া যায় না, পরিবেশ-পরিস্থিতির প্রতিকূলে আমাদের যাবার সাধ্যিই বা কতটুকু। শুরুতেই লেখকের ভাষায় বলেছি, এটা উত্তরাঞ্চলের একটা জেলার চিত্র নিয়ে লেখা উপন্যাস। কিন্তু উপন্যাস পাঠান্তে পাঠকের মনে হবে, এখানে শুধু ভাষার ব্যবহারেই লেখক উত্তরাঞ্চলকে প্রাধান্য দিয়েছেন, উপন্যাসের মূল পটভূমি সারাবাংলার এক চিরাচরিত রূপ।
মনির মুন্না
৬ই জানুয়ারি ১৯৭৭ সালে খুলনা জেলার পাইকগাছা থানার কপিলমুনি শহরের নুন্দার পুকুরপাড় এলাকায় মনির মুন্না জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আব্দুর রাজ্জাক মিয়া ও মা আলেয়া বেগমের আট সন্তানের মধ্যে ৬ষ্ঠ সন্তান তিনি। পেশাগত জীবনে তিনি বাংলাদেশের একটি প্রথম সারির ইআরপি সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির অপারেশন ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পরিবেশবাদী সংগঠনের সাথে জড়িত। জড়িত আছেন রােটারি ইন্টারন্যাশনাল কার্যক্রমের সাথে। বাংলাদেশের মূকাভিনয় শিল্পের প্রসার ও প্রচারের জন্য কাজ করছেন দীর্ঘদিন যাবৎ। কাজ করছেন নদী গবেষণা নিয়েও। সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে প্রতিষ্ঠিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘We Are For Them' এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তিনি।
ব্যক্তিগত জীবনে দুই পরীর রাজ্যে সুখী বাবা। স্ত্রী আফরােজা সুলতানা ও দুই কন্যা সন্তান নিয়ে তার স্বর্গ। সাহিত্যর প্রতি ভালােবাসা তাঁর আশৈশব। দাদা ভাই আওলাদ হােসেন সাত্তারের লেখালেখি থেকে উৎসাহী হয়ে ছােটবেলা থেকে লেখার সাথে যুক্ত হয়েছেন। কর্মক্ষেত্রে প্রচণ্ড ব্যস্ত এ মানুষ এত কিছুর মাঝেও জীবিত রেখেছেন তার সাহিত্যসত্ত্বাকে। বিচরণ করছেন সাহিত্যের সব শাখাতেই। তাঁর সফলতা বা ব্যর্থতা নির্ণয়ের ভার পাঠককূলের।