শিশুদের জন্য কত গল্পই তো লেখা হয়। সব গল্প চিরকালের নয়। কিছু গল্প চিরকালের। সেসব গল্পের লেখকেরাও চিরকালের। চিরকালের সেই লেখকদের নির্বাচিত কিছু গল্প নিয়ে এই সিরিজ। সিরিজের প্রতিটি গল্পে লেখকের ভাষা সম্পূর্ণ রক্ষা করা হয়েছে। কেননা গল্পগুলো চিরকালের হয়ে উঠেছে শুধু কাহিনীর গুণে নয়, লেখকের ভাষার গুণেও। চিরকালের এসব সম্পদকে অবিকৃতভাবে এই সিরিজে প্রকাশ করা হয়েছে, যেন গুল্পগুলো থেকে প্রত্যেকটি শিশু তার মতো করে শিক্ষণীয় বিষয় গ্রহণ করতে পারে। তরুণ চিত্রশিল্পী সব্যসাচী মিস্ত্রী চিরকালের এই গল্পকে চিত্রের মাধ্যমে নতুন করে চিত্রগল্প সৃষ্টি করেছেন।
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
উপেন্দ্রকিশাের রায়চৌধুরীর জন্ম হয়েছিল ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দের ১২ মে, অধুনা বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার মসূয়া গ্রামে। উপেন্দ্রকিশােরের বাবার নাম কালীনাথ রায়, মায়ের নাম জয়তারা। বাবা কালীনাথ সংস্কৃত, আরবি ও ফারসি ভাষায় বিশেষ পারদর্শী ছিলেন। সাধারণের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন শ্যামসুন্দর মুন্সী নামে। কালীনাথের পাঁচ পুত্র ও দুই কন্যা। যথাক্রমে তাঁদের নামগুলাে হল-সারদারঞ্জন, কামদারঞ্জন, মুক্তিদারঞ্জন, কুলদারঞ্জন, প্রমদারঞ্জন, মৃণালিনী ও গিরিবালা। দ্বিতীয় পুত্র কামদারঞ্জনকে দত্তক নেন কালীনাথের প্রতিবেশী ও জ্ঞাতিভাই হরিকিশাের রায়চৌধুরী। এই কামদারঞ্জনই হলেন উপেন্দ্রকিশাের । দত্তক গ্রহণকালে হরিকিশাের রায়চৌধুরীর নাম ও পদবীর সঙ্গে মিলিয়ে কামদারঞ্জন রায়ের নামকরণ হয় উপেন্দ্রকিশাের রায়চৌধুরী। উপেন্দ্রকিশাের রায়চৌধুরী তার অসামান্য প্রতিভার পরিচয় রেখে গিয়েছেন সাহিত্য, সংগীত, চিত্রশিল্প, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ইত্যাদি বিচিত্র-বিদ্যাবিষয়ক অজস্র রচনার মধ্যে। সর্বত্রই তাঁর অনায়াস ও অবাধ বিচরণ আমাদের বিস্মিত করে। তাঁর কর্মধারা বহুধা ব্যাপ্ত এবং প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাঁর বিশিষ্টতার স্বাক্ষর বর্তমান। তিনি নিপুণ চিত্রকর, সংগীতে বিশেষজ্ঞ, কুশলী যন্ত্রবিদ, নিবিষ্ট বিজ্ঞান-গবেষক এবং সর্বোপরি ছােটদের মনােহারী গল্পকথক ।।