ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ আগেকার দিন হলে বলা যেত, মিলনান্ত প্রেমের মধুর উপাখ্যান। কিন্তু এ-জাতীয় বিশেষণ-ভূষিত উপন্যাসের অনুষঙ্গে বহু ক্ষেত্রেই জড়িয়ে আছে যেসব বস্তাপচা কাহিনীর অনিবার্য স্মৃতি, তার সঙ্গে কি কোনও মিল রয়েছে এই ‘হৃদয়বৃত্তান্ত’-এর? থাকা কি সম্ভব? বিশেষত, যে-উপন্যাসের লেখক স্বয়ং শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়? বলা হয় বটে, প্রেম যুগে যুগে। কিন্তু যুগোপযোগী প্রেমের ভিতরের চেহারাটা সবাই দেখাতে পারেন না। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় কিন্তু পারেন। তাঁই এই পারঙ্গমতারই অনুপম দৃষ্টান্ত ‘হৃদয়বৃত্তান্ত’।
আমেরিকা-প্রবাসী এক বাঙালি স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের জটিলতা, স্ক্যান্ডাল ও আসন্ন বিচ্ছেদ থেকে সূচনা হলেও এ-কাহিনীতে ক্রমশযুক্ত হয়েছে হৃদয়সম্পর্কের নতুন-নতুন মাত্রা ও এই কলকাতা শহর। আধুনিক যুবক-যুবতীদের অস্থিরচিত্ততা, নিষ্ঠুরতা, প্রতিশোধ-প্রবণতা ও মূল্যবোধহীনতার আপাত-কাহিনীকে এক স্তরে রেখেও অতি সুনিপুণ ও সার্থকভাবে অন্য স্তরে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বুনে গিয়েছেন চিরন্তন মুল্যবোধ ও বিশ্বাসের চিরকালীন প্রেম-ভালবাসা-আবেগ ও নির্ভরতার এক অসামান্য বৃত্তান্ত।
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
জন্ম : ২ নভেম্বর, ১৯৩৫। দেশ—ঢাকা জেলার বিক্রমপুর । শৈশব কেটেছে নানা জায়গায় । পিতা রেলের চাকুরে। সেই সূত্রে এক যাযাবর জীবন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কলকাতায়। এরপর বিহার, উত্তরবাংলা, পূর্ববাংলা, আসাম । শৈশবের স্মৃতি ঘুরেফিরে নানা রচনায় উঁকি মেরেছে। পঞ্চাশ দশকের গােড়ায় কুচবিহার । মিশনারি স্কুল ও বাের্ডিং-এর জীবন । ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে আই-এ | কলকাতার কলেজ থেকে বি এ । স্নাতকোত্তর পড়াশুনা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্কুল-শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবনের শুরু | এখন বৃত্তি— সাংবাদিকতা । আনন্দবাজার পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত। প্রথম গল্প— দেশ পত্রিকায়। প্রথম উপন্যাস— ‘ঘুণপােকা’ । প্রথম কিশাের উপন্যাস—‘মনােজদের অদ্ভুত বাড়ি। কিশাের সাহিত্যে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতিরূপে ১৯৮৫ সালে পেয়েছেন বিদ্যাসাগর পুরস্কার। এর আগে পেয়েছেন আনন্দ পুরস্কার।