কলকাতার সিরাজউদ্দৌলা ছাত্রাবাসে শেখ মুজিব ডাকলেন সবাইকে। ব্রিটিশরা বিদায় নিচ্ছে, পাকিস্তান ও ভারত আলাদা আলাদাভাবে স্বাধীন হচ্ছে। এখন কী করা যাবে? ঢাকায় ফিরেই শেখ মুজিব ঝাঁপিয়ে পড়লেন রাষ্ট্রভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে। পাকিস্তানের বয়স তখন মাত্র কয়েক মাস। আর সেই সব আন্দোলনে পাশাপাশি যাগ দিচ্ছেন তরুণতর তাজউদ্দীন আহমদও। একটা সাইকেল নিয়ে তিনি চষে বেড়ান ঢাকা শহর। ঢাকায় আসেন মওলানা ভাসানী, আসেন সাহরাওয়ার্দী। তরুণ মুজিব এরই মধ্যে জনপ্রিয়, তিনি বারবার গ্রেপ্তার হন, কারাগারে যান, মুক্তি পাওয়ার জন্য দাসখতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করেন। ওদিকে টুঙ্গিপাড়ায় সন্তানদের আগলে রাখেন রেনু। তিনি তাঁর স্বামীকে যেন উৎসর্গ করেছেন দেশের জন্য। এমনই প্রেক্ষাপটে পূর্ব বাংলায় আসে ১৯৫২ সাল, আসে একুশে ফেব্রুয়ারি। যাঁরা ইতিহাস নির্মাণ করেছেন, তাঁরাই এই উপন্যাসের চরিত্র। ইতিহাসে সন-তারিখ থাকে, থাকে না ব্যক্তিমানুষের হৃদয়ের সংবাদ। যারা ভার এনেছিল একটা ট্রিলজির প্রথম খণ্ড, যা পাঠকের সামনে রক্ত-মাংসের মানুষ হিসেবে হাজির করবে আমাদের ইতিহাস- নির্মাতাদের। বাংলাদেশের স্বাধীনতা এক দিনে অর্জিত হয়নি, এর পেছনে আছে দীর্ঘদিনের লড়াই-সংগ্রাম। এই আখ্যান আমাদের জানাবে সে কথাই, কিন্তু তা নিছক ইতিহাস হয়ে রইবে না, হয়ে উঠবে কতগুলা মানবচরিত্রের গল্প। বাংলাদেশের পাঠকদের জন্য এটি একটি অবশ্যপাঠ্য গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
আনিসুল হক
জন্ম ৪ মার্চ ১৯৬৫, নীলফামারী জেলায় । শৈশব ও বাল্যকাল কেটেছে রংপুরে। পড়াশুনা করছেন পরীক্ষণ বিদ্যালয় রংপুর, রংপুর জিলা স্কুল, রংপুর কারমাইকেল কলেজ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, | ঢাকায়। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, রম্যরচনা, ভ্রমণকাহিনি, শিশুসাহিত্য-সাহিত্যের নানা শাখায় তিনি সক্রিয়। টেলিভিশন নাটক ও চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যও রচনা করেছেন । শিশু-কিশােরদের জন্যও লিখেছেন অনেক বই। ২০১৫ সালে প্রথমা থেকে বেরিয়েছে বাগানবাড়ি রহস্য পেয়েছেন। বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বেশ কয়েকটি পুরস্কার ।