কবিতা একশত পঞ্চাশ-এ বৃহত্তর কবিতানুরাগী পাঠকদের কাছে সম্পূর্ণ নতুন শৈলীতে ফারুক আলমগীর উপস্থিত হতে যাচ্ছেন। এবার তাঁর আত্মপ্রকাশ পরিণতমনস্ক কবির নবজন্মের মতো পুনরুত্থান বলাই শ্রেয়তর। ষাটের স্যাড জেনারেশনের কবি ফারুক আলমগীরের কবিতার উচ্চারণে ছিলো হতাশার সঙ্গে জীবন সংগ্রাম প্রাপ্তি অপ্রাপ্তি এবং বিপর্যয়ের বার্তা। অস্থির ষাটে সুন্দরের যে বসতি ধসে পড়েছিল তাঁর সমুখে, জাতির গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের নতুন শতাব্দীতেও ফারুক আলমগীরের পদতল অদ্যাপি মলিন, তবুও স্বপ্ন দেখেন নতুন প্রত্যুষের। তাঁর কবিতা স্বদেশ স্বকাল থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো সত্তা নয়। আজীবন ধারণ করেছেন প্রগতিশীল ধ্যানধারণা। তাই সমাজ-সজ্ঞান বাণীই হয়ে উঠেছে তার কবিতার মর্মার্থ। বাংলাদেশের রক্তাক্ত জন্ম বৃত্তান্ত যেমন তাঁকে উজ্জীবিত করে তেমনি প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পূর্ব য়ুরোপে সমাজতন্ত্রের পতন তাঁকে কষ্ট দেয়। বর্তমান কাব্যে ‘কালের পথিকবর’ সার্ধ-শতকের রবীন্দ্রনাথকে দিয়ে শুরু করে ভাষার-বন্দনায় “মা ও শিশু”-তে এসে যতি টেনেছেন, এখানেই তাঁর সার্থকতা। বইটি কাব্যপ্রেমীদের মনের ভুবনে ঠাঁই করে নেওয়ার মতোই।
ফারুক আলমগীর
ফারুক আলমগীর (২০ সেপ্টেম্বর ১৯৪৩) জন্ম চট্টগ্রামে। কবি ও প্রাবন্ধিক। পেশা : সম্প্রচার সাংবাদিকতা, শিক্ষকতা, মিডিয়া পরামর্শক। মধ্যষাটের কল্লোলিত সময়ে তাঁর উত্থান। ছাত্র আন্দোলন, প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলন থেকে চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ভাবে সেই সময়ে জড়িত ছিলেন। স্যাড জেনারেশনের কবি ফারুক আলমগীর সাম্প্রতিক কাব্যভুবনে তাঁর সৃষ্টিশীল দৃপ্ত পদচারণা অব্যাহত রেখেছেন। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : শ্যামলী দেশের ক্ষতপ্রান্তর, স্বপ্নের মধ্যে শৈশব, লোকেশ লৌহিত্য, আমার দিন রাত্রি, অন্ত্যেষ্টি সঙ্গীত : পুনরুত্থানের আগে, অভ্যুত্থানের আগে, এক দুরাত্মার স্বগতোক্তি, মধ্যাহ্নে মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে। শিশুতোষ রচনা : ছোটদের অস্কার ওয়াইল্ড। গদ্যগ্রন্থ : টেলিভিশন চলমান দৃশ্য ও ধ্বনির লাবণ্য, সম্প্রচার সংবাদ : রূপরেখা। তিনি শিশু একাডেমী-অগ্রণী ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার, নিহার গুপ্ত স্মৃতিপদক, উত্তরবঙ্গ সাহিত্য পুরস্কার, মাসিক ফটিকছড়ি সাহিত্য পদক ও টাঙ্গাইল সাহিত্য সংসদের অরণি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন।