'খুকুমণির ছড়া' যেনো বাঙালির আদর-আহ্লাদের ঝুড়ি। বাঙালি বাৎসল্য রসের পূর্ণাবয়ব ধরা পড়ে এর প্রতিটি ছড়ায়। মা আদর করে তার সন্তানের গালে চুমা দেন। সেই চিত্র বাঙালি হৃদয়কে দারুণভাবে নাড়া দেয়। মাতৃস্নেহের সেই অকৃত্রিম রূপ-রস ছড়াকার ফুটিয়ে তুলেছেন পরম মমতায় :
কোথায় আমার চাঁদমণি,
মুচকি হাসি মুখখানি! ঝাঁপিয়ে কোলে
আয় দেখি মা
গাল ভরে দি
হাজার চুমা!
রবীন্দ্রনাথের ছেলে ভুলানো ছড়া এবং মেয়েলি ছড়া যেমন কেবল ছেলে বা মেয়েদের নয়, তেমনি যোগীন্দ্রনাথ সরকারের 'খুকুমণির ছড়া' কেবল খুকুদের নয়। ছেলে, মেয়ে উভয়ের। এমনকি এই খুকুরা যখন দিদি হবেন, মা হবেন, ঠাকুমা, দিদিমা, দাদি, নানি হবেন তখনো এই ছড়াগুলো থেকেই তারা রস আহরণ করবেন। একইভাবে বলা যায় খোকারা দাদা, ঠাকুরদাদা, দাদু, নানা হবার পরও ছড়াগুলো তাদের ছেড়ে যাবে না। তারা এগুলো থেকে অবচেতন মনে সাহিত্য রস আস্বাদন করবে। বড়রা অনুসন্ধান করবে এর কার্য-কারণ আর গবেষকদের চোখ থাকবে এর মধ্যকার তত্ত্বান্বেষণে। ফলে যোগীন্দ্রনাথের 'খুকুমণির ছড়া' যে সর্বকালের, সর্বমানুষের তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
ড. অনুপম হীরা মণ্ডল