ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ মিসির আলি ভালো ঝামেলায় পড়েছেন। ঝামেলা সায়রা বানুকে নিয়ে। মেয়েটি যখনই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসে তিনি কেমন যেন গুটিয়ে যান। সায়রা বানুর সমস্যাটা জটিল। সে না-কি ইবলিশ শয়তানের সঙ্গে কথা বলেছে। তাকে দেখেছে। সায়রা বানুর বক্তব্য মিসির আলি না পারছেন গ্রহণ করতে, না পারছেন বাতিল করতে। মিসির আলি সারা জীবন যুক্তির সিঁড়ি ব্যবহার করেছেন। আজ তাঁকে যু্ক্তির বা্ইরে পা দিতে হচ্ছে। তাঁর মনে ভয় ঢুকে গেছে। রাতে ঘুম ভাঙলে তিনি আতংকিত বোধ করেন। তাঁর মনে হয় ইবলিশ শয়তানের সঙ্গে সম্ভবত তাঁরও দেখা হবে।
হুমায়ূন আহমেদ
কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে ‘নন্দিত নরকের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ। এই উপন্যাসে নিম্নমধ্যবিত্ত এক পরিবারের যাপিত জীবনের আনন্দ-বেদনা, স্বপ্ন, মর্মান্তিক ট্রাজেডি মূর্ত হয়ে উঠেছে। নগরজীবনের পটভূমিতেই তাঁর অধিকাংশ উপন্যাস রচিত। তবে গ্রামীণ জীবনের চিত্রও গভীর মমতায় তুলে ধরেছেন এই কথাশিল্পী। এর উজ্জ্বল উদাহরণ অচিনপুর ফেরা মধ্যাহ্ন মুক্তিযুদ্ধ বারবার তাঁর লেখায় ফুঠে উঠেছে। এই কথার উজ্জ্বল স্বাক্ষর জোছনা ও জননীর গল্প ১৯৭১ আগুনের পরশমণি শ্যামল ছায়া নির্বাসন প্রভৃতি। উপন্যাস গৌরীপুর জংশন যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ চাঁদের আলােয় কয়েকজন যুবক'-এ জীবন ও চারপাশকে দেখার ভিন্ন দৃষ্টিকোণ মূর্ত হয়ে উঠেছে ‘বাদশা নামদার’ ও ‘মাতাল হাওয়ায় । অতীত ও নিকট-অতীতের রাজরাজড়া ও সাধারণ মানুষের গল্প ইতিহাস থেকে উঠে এসেছে। গল্পকার হিসেবেও হুমায়ূন আহমেদ ভিন্ন দ্যুতিতে উদ্ভাসিত। ভ্রমণকাহিনি, রূপকথা, শিশুতােষ, কল্পবিজ্ঞান, আত্মজৈবনিক, কলামসহ সাহিত্যের বহু শাখায় তাঁর বিচরণ ও সিদ্ধি।
হুমায়ুন আহমেদের জন্ম ১৩ নভেম্বর ১৯৪৮ এবং মৃত্যু ১৯ জুলাই ২০১২।