এলোমেলো চিন্তাভাবনাগুলো বিক্ষিপ্তভাবে ঘুরপাক খাচ্ছে মাথার ভেতর। তাতে কতটা সময় পেরিয়ে গেল, রুপকথার খেয়াল নেই। থম ধরে বসে আছে সে। ফাঁকা দৃষ্টি জানালা ভেদ করে পাড়ি জমিয়েছে দূর আকাশে। তীরে এসে তরী ডোবার মতো সমস্ত প্রতীক্ষা যখন ব্যর্থ হলো, নোঙরবিহীন নৌকার মতো এক সাগরের মধ্যিখানে খাবি খাওয়ার জোগাড়! এই মুহূর্তে রুপকুঠিকে খুব দরকার। সে-ই একমাত্র খড়কুটো। বেঁচে থাকার এক টুকরো আশা। খানিক আগে ওর খোঁজ করেছিল সে। বাড়িতেই আছে, মহাব্যস্ত। তাকে ঘিরে ধরেছে পরিবারের সবাই। ঠিক যেন সাত বছর আগের পুনরাবৃত্তি! অথচ সকালেও তার এই বাড়িতে আসা উপলক্ষে পরিবারের সদস্যদের মন বিক্ষিপ্ত ছিল। চারুলতা মুখিয়ে ছিলেন যেন দেখামাত্র হামলে পড়বেন। নেহাৎ রুপকথার কড়া নিষেধাজ্ঞায় নিজেকে সামলে রেখেছিলেন। কিন্তু যখনই রুপকুঠি বাড়ির চৌহদ্দির ভেতর পা রেখেছে, প্রতিটা মানুষ অবাক বিস্ময়ে দেখেছে তার পাশে দাঁড়ানো বদলে যাওয়া মানুষটিকে। সেই বদল আচমকা ছুঁয়ে গেছে সবাইকে। বিক্ষিপ্ত মন কোথায় পালাল তখন, কে জানে। কারওই ধর্তব্যে রইল না এই বদলে যাওয়া আদলটি রুপকথাকে কতটা ক্ষতবিক্ষত করে।