ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ স্যার, আসব ? আমি চমকে তাকালাম। দরজার সামনে যিনি দাঁড়িয়ে তিনিই যে ম্যাজিক মুনশি তাতে সন্দেহ রইল না। মুখভর্তি দাড়িগোঁফ। মুনশি মাওলানারা দাড়ি রাখেন। গোঁফ রাখেন না। পানি পান করার সময় গোঁফ পানি স্পর্শ করলে পানি নষ্ট (বা হারাম) হয়ে য়ায়, এই কথা প্রচলিত। যদিও হজরত আলী (রাঃ)- এর গালপাট্টা ছিল। গোঁফ ছিল, দাড়িও ছিল। দরজার সামনে যিনি দাড়িয়ে আছেন তার মাথার চুল গ্রামের বয়াতিদের মতো লম্বা। মধ্যবয়স্ক মানুষ। অত্যন্ত সুপুরুষ। চোখের তারা ঘন কালো। চোখ যক্ষা রোগীর মতো ঝকঝক করছে। তবে মানুষটির যক্ষা নেই। খাকলে খুখখুক কাশি শুনতাম। মুনশি সাহেব সবুজ রঙের পাঞ্জাবি পরেছেন। নবীজী (দঃ) সবুজ রঙ পছন্দ করতেন। তাঁর মাথার পাগড়ি ছিল সবুজ। ম্যাজিক মুনশির সবুজ পাঞ্জাবির পেছনে নবীজীর (দঃ) পছন্দের রঙ কাজ করতে পারে। তিন পাঞ্জাবির সঙ্গে লুঙ্গি পরেছেন। লুঙ্গির রঙ ধবধবে সাদা। পায়ে খড়ম। বিশেষ ধরনের খড়ম। ময়মনসিংহ অঞ্চলে এই খড়মকে বলে ‘বউলাওয়ালা খড়ম’ । আপনিই কি ম্যাজিক মুনিশি ?
ভূমিকা ‘ম্যাজিক মুনশি’কে কি উপন্যাস বলা যাবে? উপন্যাস বললে প্রকাশেকের সুবিধা হয়। পাঠকরা উপন্যাস পড়তে পছন্দ করেন। সমস্যা হচ্ছে ‘ম্যাজিক মুনশি’কে কোনো পর্যায়েই ফেলা যাচ্ছে না। ‘ম্যাজিক মুনশি’ হলো রহস্যময়তার বর্ণনা এবং কিছুটা বিশ্লেষণ। উপন্যাসের কাঠামো অবশ্যি ব্যবহার করা হয়েছে। এই লেখায় আমি কাউকে বিভ্রান্ত করতে চাচ্ছি না। আমি নিজে বিভ্রান্ত মানুষ কোনোকালেই ছিনাম না, কাজেই নিজের বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দেওয়ার প্রশ্ন আসে না। তবে আমি সচেতনভাবেই জগতের রহস্যময়তার প্রতি ইঙ্গিত করেছি। এই অধিকার আমার আছে। পাঠকদের প্রতি অনুরোধ, ‘ম্যাজিক মুনশি’ বইটির দু’বার পড়বেন। প্রথমপাঠের অস্পষ্ট বিষয়গুলি দ্বিতীয়পাঠে স্পষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা। বইয়ের বর্ণিত কৃষ্ণশক্তি আহবানে ধারেকাছেও কেউ যাবেন না। মানব মস্তিষ্ক অতি বিচিত্র কারণে সাজেশনে বশীভূত। ‘Trance' অবস্থায় মস্তিষ্কের বিচিত্র কার্যকলাপের দিকে যেতে পারে। অকারণ হেলুসিনেশনের শিকার হওয়া হবে বিরাট মূর্খামি। হুমায়ূন আহমেদ নহাশপল্লী
হুমায়ূন আহমেদ
পৃথিবীতে অনেক খারাপ মানুষ আছে, কিন্তু খারাপ বাবা একটাও নেই।'
হুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশের প্রবাদপ্রতিম জনপ্রিয় একজন ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও জনপ্রিয় লেখক বলে গণ্য করা হয়। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৩ নভেম্বর, ১৯৪৮, নেত্রকোনা জেলায়। তার আত্মজীবনীতে নেত্রকোনার নানান কথা উঠে এসেছে। এমনকি সেখানে তিনি 'শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ' নামে একটি স্কুল ও প্রতিষ্ঠা করেছেন।
মারা গেছেন: ১৯ জুলাই, ২০১২, নিউ ইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সে সময়ে তিনি লিখেছিলেন 'নিউইয়র্কের নীলাকাশে ঝকঝকে রোদ' এখানে তার ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সময় পাওয়া যায়। ' এখানে তার ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সময় পাওয়া যায়।
সন্তান শীলা আহমেদ, নুহাশ হুমায়ূন, নোভা আহমেদ, বিপাশা আহমেদ, নিনিত আহমেদ, নিষাদ আহমেদ। নুহাশ হুমায়ুন একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার । তার উল্লেখযোগ্য কীর্তি হল 'ইতি তোমারই ঢাকা', 'পেটকাটা ষ' ও 'মশারি'। ২০১৮ সালে 'ইতি তোমারই ঢাকা' নাটকটির মাধ্যমে বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে।
ভাইবোন: মুহম্মদ জাফর ইকবাল, আহসান হাবীব, রুখসানা আহমেদ, সুফিয়া হায়দার, মমতাজ শাহিদ। ভাইবোনদের মধ্যে প্রায় সবাই লেখক। মুহম্মদ জাফর ইকবাল বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় সায়েন্স ফিকশন লেখক। আহসান হাবীব উম্মাদ নামক একটি বহুল প্রচারিত রম্য পত্রিকার সম্পাদক।
জনপ্রিয় উপন্যাসসমূহ:
বাদশাহ নমদার
শঙ্খনীল কারাগার
আগুনের পরশমনি
মেঘ বলেছে যাবো যাবো
বাদশাহ নামদার
অপেক্ষা
নন্দিত নরকে
এইসব দিনরাত্রি সহ আরো আরো অনেক। (যারা হুমায়ূন পাঠে ভীষণ ভীষণ আগ্রহী তারা আরো আরো বইয়ের নাম জানতে চাইলে বই বাজার ডট কমে খুজে দেখতে পারেন। তার সমস্ত বই আমাদের সাইটে পাবেন।) আপনার পড়া হুমায়ূনের বইয়ের নাম আমাদের জানান।
হুমায়ূন পাঠ আপনার সময়কে রাঙিয়ে তুলবে না শুধু, আপনার সময়কে আপনার কাছে নিয়ে আসবে, আপনাকে হাসিকান্নায় মাতিয়ে তুলবে। বই পড়ুন, বইয়ের সাথে থাকুন।