এই সাক্ষাৎকার আমাদেরকে আশার বড়ি খাইয়ে বড় করে তোলা এ সমাজে লেখালেখি আর 'লেখক'-এর ভূমিকা নিয়ে। এখানে মাসরুর 'লেখক হিসেবে কথা বলতেই অস্বীকার করে বসেছেন। তাঁর মতে, কথা হতে হবে 'মানুষ হিসেবে। কারণ, লেখকেরা সাহিত্যে এসে সামাজিক ও নৈতিকভাবে ঠিক থাকতে চান, তাই তাঁরা 'এসেনশিয়ালি'ই ভণ্ড, যেটা গড় মানুষেরা নন। তিনি বলেন, এ সভ্যতার সবচাইতে বড় এক মিথ্যা ধারণা এই যে, লেখকেরা মহান, তাঁরা লেখায় সত্য ও সুন্দরের কথা বলেন, নিপীড়ন নিয়ে বলেন। কিন্তু সত্য হচ্ছে, লেখকেরা কী লিখবেন আর কী লিখবেন না, সেটা নিয়ে সমাজ ও শাসকশক্তির তরফ থেকে তাদেরকে ম্যাসেজটা দেওয়াই আছে। সাহিত্য নৈতিকতাকে ধরে রাখবে, মানুষের জন্য দয়া-মায়া ও তাদের বেঁচে থাকার সংগ্রামের প্রতি একটা 'সঠিক' অবস্থান বজায় রাখবে, এই-ই হচ্ছে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ম্যাসেজ।
অতএব সমানে লেখকেরা লিখছেন 'দায়িত্বশীল লেখা, যা কিনা শাসনব্যবস্থার কাঠামোগুলিকেই রিপ্রোডিউস ও সমর্থন করে চলেছে। তাতে করে সিস্টেমটাকেই দেখাচ্ছে আরও স্বাভাবিক, আরও পবিত্র এবং আরও দয়ালু। এই অর্থে, তিনি বলছেন, সাহিত্যিকেরা শাসকগোষ্ঠীর অংশ। আর তাঁরা লেখায় নিজেদেরকে 'মানবতাবাদী' করে দেখাতে গিয়ে শুধু নিপীড়িতের স্টেরিওটাইপই বানাচ্ছেন না, তাকে নিয়ে তামাশাও করে চলেছেন।
তিনি বলেন, মানবমুক্তির মশাল জ্বালানো ওই 'মানবতাবাদী সাহিত্য রুম করেছে ভাষাকে, বিদায় বলেছে ইমাজিনেশনকে, ফলে সাহিত্য হয়ে উঠেছে মৃত এবং দর্শনের দিক থেকে ত্রুটিপূর্ণ। আর তাতে সুবিধা হয়েছে শাসকশ্রেণীরই, কারণ তারা দেখছে যে, সাহিত্যের সবটাই এখন রুটিন, কোনোকিছুই আর প্রভোকেটিভ নয়।