ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ ১৯৮৪ সালে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা নারী-পুরুষের সামাজিক জীবনযাত্রায় তাদের ভাগ্য ও জীবনের গতিবিধি অনুসন্ধানে প্রবৃত্ত হয়েছেন এই উপন্যাসের লেখক। যুদ্ধ-পরবর্তীকালের ঘটনাবলীর প্রবল ঘূর্ণাবর্তে উপন্যাসের নায়ক, মনোয়ারা, আসমা, বশর, তাজুল, লারা, রাজী পলাশ, নদী এবং আরো অনেকের জীবন আবর্তিত। লেখক দেখেছেন রাজনীতি, স্বৈরাচার শাসনের প্রবল নিষ্পেষণ; দেখিয়েছেন অফিস-জীবনে নায়কের মনের গভীরের সঙ্গে বাইরের সংঘর্ষ, পদোন্নতির প্রতিযোগিতা এবং চরিত্রাবলীর অনমনীয়তা ও অসহায় বিপন্নতা; লারা ও তাজুলের মৃত্যু মর্মস্পর্শী ঘটনা। উত্তম পুরুষের বর্ণিত এই উপন্যাস মুক্তিযুদ্ধ ও স্বৈরাচার আমলের অসামান্য এক দলিল, একজন নিম্ম মধ্যবিত্ত চাকুরিজীবির দ্রোহ ও নির্মম স্বিকারোক্তি। লোভ, লালসা অত্যাচার ও প্রলোভন থেকে মুক্তিযোদ্ধার বাঁচার সংগ্রাম, যুদ্ধাহাতের অভিমান, ভালোবাসা, মানব-চরিত্রের নিগূঢ় পরিবর্তন, দ্রবণ ও লোভের মানবিক সংঘর্ষ প্রতিফলিত। মানুষের জীভনের মহত্তর দিকগুলো উপন্যাসে দীপ্র হয়ে উঠেছে নির্মল ও বিশুদ্ধ আবেগে, সৌন্দর্যচেতনায় ও মানবতাবাদে।
বিপ্রদাশ বড়ুয়া
বিপ্রদাশ বড়ুয়া, জন্ম ২ আশ্বিন ১৮৬২ শকাব্দ (২০ সেপ্টেম্বর ১৯৪০) চট্টগ্রামের ইছামতী গ্রামে। পড়াশুনা চট্টগ্রাম, রাঙামাটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। গল্প, উপন্যাস, প্রকৃতি ও বিচিত্র বিষয়ে লেখেন। পাখি, সমুদ্র ও বৃক্ষ, বনমর্মরভূমি, ভ্রমণ, গবেষণা-বিশাল লেখার ভুবন। বাংলাদেশের আনাচ-কানাচ উঠে আসে দৈনিক পত্রিকার কলামে। রাতের রেলগাড়িতে ছায়াপথে ভ্রমণ এই বিষয়ে প্রথম পদক্ষেপ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের বিশাল রাজ্যে প্রবেশের ছোট্ট জানালা। সেই থেকে শুরু। তার ফসল দৈনিক পত্রিকার সহজ-সরল লেখাগুলো। প্রকৃতির বিচিত্র বিষয় নিয়ে এক ডজনের বেশি বই প্রকাশিত হয়েছে। গাছপালা, তরুলতা ও বৃক্ষ ও নিসর্গ, নিসর্গের খোঁজে, প্রকৃতিও প্রতিশোধপরায়ণ, বিপন্ন বাংলাদেশ ও বন্ধু বৃক্ষ প্রভৃতি গ্রন্থে তাঁর মনোভঙ্গি ধরা পড়ে। এসব লেখায় ছড়িয়ে আছে আকাশ ও নক্ষত্রপ্রীতি। ১৯৯১-তে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ১৪১১ সনে বাংলাদেশ শিশু একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার লাভ। তাঁর তিনটি বই অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার লাভ করে। পেয়েছেন রেডি টুডে প্রবর্তিত প্রথম গ্রিন এওয়ার্ড ২০১০।