গল্প মূলত মানুষের জীবন। সে জীবনকে নানাভাবে চিত্রিত করেন অজয়। ছড়া কবিতা প্রবন্ধ যা-ই লেখা হোক না কেন, ঘুরেফিরে খুঁটে খায় জীবনের স্বাদ বর্ণ গন্ধ। এভাবেই ষাট পেরিয়ে গেল তার। হঠাৎই মনে হলো একদিন, আরে এমন হতে পারে না? করোনার ভয় আর চাপা পরিবেশে খুলে গেল বন্ধ এক জানালা। কী হতে পারে আর কী হতে পারে না সেটা বড় কথা না, বড় বিষয় অপর্ণা জাহানারা জুলেখা মঞ্জু ঘোষ―এমন সব নারী ভিড় করে আছে তার মাথায়।
কখনো লেখা হয়নি এমন না। লেখা হয়েছে, ছাপা হয়েছে, পাঠক নিয়েছেও। কিন্তু গল্পের বই হতে পারে, এটা মাথায় কাজ করেনি। আজকাল ছোটগল্প দুই ধরনের হয়ে যাচ্ছে। একটিতে আধুনিকতার নামে অকারণ কুয়াশা। অন্যটি পুরনো হয়ে যাওয়া ধারার চর্বিত চর্বণ। তবে দুঃসাধ্য নতুন কিছু যোগ করা। ঝাঁ চকচকে লেখকের দল আগে থেকেই দখল করে আছেন গল্পের বাজার। তাতে কী?
এই গল্পগুলো তো অজয় লেখেনি। লিখেছে লিখিয়ে নিয়েছে তার গল্পের নারীরা। যাদের জীবন, যাদের যৌবন, যাদের শেষবেলা তাকে মন্ত্রমুগ্ধের মতো গল্প শুনিয়েছে। কারা এরা? এরা তো সশরীরে আসে না। আসে হাওয়ায়, আসে আকাশের ডানায়। অথচ মাটিতেই তাদের পা। গল্পগুলো জীবন আর জীবনের নানা বাঁকে খুলে যাওয়া এক জগতের দরজা। যা দিয়ে অনায়াসে প্রবেশ করতে পারবেন পাঠক।
ঈশ্বর অথবা প্রকৃতি যখন আপন গল্পে বুঁদ তখন কলম কী করতে পারে? সে গল্পগুলো যদি মানুষের মনে এখন তার প্রবেশাধিকার নাও পায়, সময় তাদের একদিন মনোজগতে ঠাঁই দেবেই। এই বিশ্বাস এই গল্পগ্রন্থের প্রাণ। মানুষের জন্য গল্প হোক। গল্প হোক জীবনযাপন ও উত্তরণের জন্য।