প্রেম। সার্বজনীন ও সুতীব্র এক অনুভূতির নাম। প্রেম বিবর্জিত জগৎ ও জীবন অসম্ভব, অলীক ও প্রকৃতি-বিরুদ্ধ। প্রকৃতির অমোঘ নিয়মেই আসে প্রেম। মিলনে, পরিণয়ে পরিণতি পায় কোনো কোনো প্রেম। আবার কোনো কোনো প্রেম বিচ্ছেদ, বিধি-নিষেধের ক্ষমাহীন অলঙ্ঘ্য প্রাচীরের চৌহদ্দিতে আটকে পড়ে অপ্রাপ্তিতে পর্যবসিত হয়। প্রেমের মিলন-বিরহ, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তিই কবি হাসানাত লোকমান রচিত অপ্রেম অপত্র বইয়ের মূল উপজীব্য। এ বইয়ের ছোট্ট কলেবরে লেখকের নানা সময়ে লেখা ত্রিশটি পত্র স্থান পেয়েছে। পত্রগুলোর উদ্দিষ্ট ব্যক্তি হয়তো তাঁর অনুপ্রেরণাদায়ী কাব্যলক্ষ্মী, না হয় রক্তমাংসের মানসী। তা কাব্যলক্ষ্মী-ই হোক, কিংবা রক্তমাংসের মানসী, এ বইয়ে কবি হাসানাত লোকমান সার্বজনীন প্রেমের বিদেহী সৌন্দর্যলোকের এক বিষণ্ণ, অথচ অপরূপ বাণীমূর্তি সৃজন করেছেন। এই মূর্তির মুখাবয়বে কখনো ধরা পড়েছে অপ্রাপ্তির বিষাদ, না-পাওয়ার হাহাকার, সঙ্গহীনতার যন্ত্রণা; আবার কখনো ফুটে উঠেছে অতীতের সুখস্মৃতি রোমন্থন, মিলনের সুখগাথা। যেন কবির হৃদয়-অচল থেকে ঝরনাধারার মতো নেমে এসেছে সুতীব্র, অম্লমধুর এক প্রেমস্রোত। সৃষ্টি হয়েছে এক সুবিশাল ও সুগভীর প্রেমসিন্ধুর। কাব্যময় গদ্যে রচিত এ বইয়ের ভাষা ও প্রকাশভঙ্গিও যেন আপনা থেকেই রসমূর্তি লাভ করেছে। নিরীক্ষাপ্রবণ কবি হাসানাত লোকমানের অপ্রেম অপত্র বইখানি বাংলা পত্রসাহিত্যের জগতে নিঃসন্দেহে এক অমূল্য সম্পদ হিসেবে পরিগণিত হবে।