অরিগামির গোলকধাঁধায় গ্রন্থটির গল্পজগৎ সাদাকালো চোখে দেখার, নাকি অন্তর্গত দৃষ্টি দিয়ে স্পর্শ করার? এই ভাবনা আসতে পারে বইটি পড়ার সময়। আঁধার, বিভ্রম, রূপান্তর, বাস্তবতা, পরাবাস্তবতা একত্রিত করে গল্পকার বুনেছেন এসব কাহিনি। বিপরীতমুখী ভাবনা নিয়ে বলে যাওয়া গল্পগুলোর কোথাও আছে সমকালীন সংকট, ব্যক্তির মানসিক টানাপড়েন, প্রেমের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি, কোথাও-বা সমান্তরাল মহাবিশ্বে চেনা চরিত্রকে আবিষ্কারের গোপন নির্যাস।
চৌদ্দটি গল্পের আলো-ছায়ায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে চারপাশের চেনা জগৎ। কিন্তু তারই গভীরে যে এত বিষাদ, এত আনন্দ এবং নতুন করে জীবনকে উদ্যাপনের আয়োজন ছিল সেসবই গল্পকারের সহজ কথাবয়নে উঠে এসেছে। সহজভাবে কাহিনিগুলো এগিয়ে গেলেও তারই মধ্যে চেতনার রং ছড়িয়ে পড়ে। কোথাও দুলে ওঠে রহস্যময়তার সূক্ষ্ম ঝালর। আর এভাবেই মাহরীন ফেরদৌসের গল্প পাঠককে নিয়ে যাবে নতুন এবং অভাবিত এক জগতের ভেতর।
মাহরীন ফেরদৌস
মাহরীন ফেরদৌস, সাহিত্য চর্চার সাথে জড়িত আছেন ২০১০ সাল থেকে। বেশ কিছু বছর ‘একুয়া রেজিয়া’ নামের আড়ালে থেকেই প্রকাশ করেছেন নিজের গল্প, উপন্যাস। পেয়েছেন পাঠক-প্রিয়তা। ব্যবসায় শিক্ষা এবং চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি নিয়ে পড়ালেখা করলেও বারবারই ফিরে এসেছেন সাহিত্যের কাছে। লিখেছেন গল্প, উপন্যাস, ফিচার ও ভ্রমণ। বর্তমানে আছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যানসাসে। প্রকাশিত ছয়টি বইয়ের মধ্যে গল্পগ্রন্থ তিনটি ‘নগরের বিস্মৃত আঁধারে’, ‘কাকতাড়ুয়ার আকাশ’ ও ‘গল্পগুলো বাড়ি গেছে’। উপন্যাসও তিনটি, ‘কিছু বিষাদ হোক পাখি’, ‘এই শহরে মেঘেরা একা’ ও ‘মনোসরণি’। ‘কাচবন্দি সিম্ফনি’ ২০১৯ এর বইমেলায় প্রকাশিত হতে যাওয়া নতুন গল্পগ্রন্থ, যার সুরেলা শব্দমালা হয়তো পাঠক মনে মোহময় সিম্ফনি এনে দিবে।