রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও আসেননি ২
বই- রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও আসেননি লেখক- মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চার বছর আগে যখন একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি শেষ করেছিলাম তখন মনে হচ্ছিল এরপরও যদি আরো থাকত,কিছুদিন পরেই লেখকের বইয়ের সিক্যুয়াল বের করার ঘোষনার পর অপেক্ষাটা তীব্র হয়েছিল,লেখক আসলেই অসম্ভব অপেক্ষা করিয়েছেন ;) এর মধ্যে কয়েকটা মৌলিক থ্রিলার বের করলেও রবীন্দ্রনাথ আসছিল না,অবশেষে এই বইমেলায় আসল,সত্যি কথা যখন এবার বইটা কিনলাম,রবীন্দ্রনাথের ভাষায় মনে হচ্ছিল," আমি ইহাকে পাইলাম"! হালকা ভয় ছিল সিক্যুয়ালে আগের ফ্লো টাকি ধরে রাখতে পারবেন? মুভি থেকে শুরু করে অনেক বইয়ের সিক্যুয়ালে দেখেছি আগের ফ্লোটা নড়বড়ে হয়ে যায়,আমি বলব এই বইয়ে লেখক অসম্ভব ভালোভাবে এই পাঠকের ইচ্ছাটা পূরন করেছেন :) কয়েকটা পয়েন্টে মুগ্ধতাটা বলার চেষ্টা করব... -আমার মতে থ্রিলার বইয়ে পাঠক যে জিনিষটা চাই,খোঁজে তা হল বইটা ধরে রাখতে পারছে কিনা,এরপর কি হবে কি হবে এই ভাবনাটা হচ্ছে কিনা,এই বইয়ের প্রতিটা অধ্যায়ের শেষে এই জিনিষটা অসম্ভব ভাবে আছে,প্রতিটা অধ্যায়ের শেষ পেইজের পর আমি দু মিনিট চুপচাপ হয়ে ভাবতাম কি হবে! :) -প্রথম বইয়ের সব চরিত্রই কম বেশি এখানে এসেছে, অনেক আগের বই হওয়াতে হয় পাঠককে আগেরটা পড়তে হবে নাইলে অসম্ভব স্মৃতিপ্রখর হতে হবে,কিন্তু লেখক এ কষ্টটা কমিয়ে দিয়েছেন,আগের সব চরিত্র যখনই এসেছে তার রিলেটেড আগের ঘটনার কিছু অংশ আর ওই সময়ের ওই চরিত্রের ঘটনার না বলা কিছু অংশ এড করেছেন,এতে পাঠক মনে করার পর বিরক্তও হলনা,নতুন গল্পও পেল! :) -এ বইয়ের সবচে মজার আর মুগ্ধতার বিষয় ছিল লেখক যেভাবে বলছেন পাঠক একদম ওভাবেই বিশ্বাস করছে,যখনই সব বিশ্বাস করে নিজের মত করে একটা ভাবনা ভাবল,তখনই টুইস্ট ছিল ;) এজন্যই সবচে উপভোগ্য লেগেছে :) -সবশেষে বলব,শেষের কয়েকটা পেইজে উত্তেজনায় দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার মত অবস্থা হওয়ার মত ঘটনা ছিল বলেই মধুরেণসমাপয়েৎ হয়েছে ভালো করেই! আর শেষ লাইনটা!! আহা.... 😊😊 আমি সবসময় বলি থ্রিলার জনরাটা আমাদের এখানে খুব অবহেলিত, লুতুপুতু প্রেমের ছড়াছড়ি,অথচ একটা থ্রিলার বই মানে অসংখ্য ভাবনা,পাঠকের মন উৎরে যাওয়ার জন্য কত উপকরণ ঢালতে হয় :( মৌলিক থ্রিলারে নাজিম উদ্দিন যেই উচ্চতায় আর ক্যালিবারের লেখা লিখছেন তাকে নিয়ে মাতামাতি আর হৈ চৈ হওয়ার কথা অনেক বেশি! তবুও আমার সবসময় আমার গর্ব হয় আমাদের একজন মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন আছেন! এরকম দমবন্ধ হওয়া মুগ্ধতায় আমাদের বেঁধে রাখুন আরো অনেক যুগ,শুভকামনা প্রিয় লেখক! ♥ মুশকান জুবেরী রহস্যে এ কদিন বুদ হয়ে ছিলাম,রাতদিন ভাবনায় ছিল, এখন সমাপ্তি.... অবশ্য সবচে বড় রহস্যটাও এখনও বলা হয়নি,তাই মনে হয় আবারও তীব্র অপেক্ষার শুরু হল.....
Book Review নাম- রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও আসেননি। লেখক- মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন। প্রকাশনী- বাতিঘর। মুদ্রিত মূল্য - ৫০০ টাকা। সুন্দরপুর থেকে মুশকান জুবেরির পালিয়ে যাওয়ার পর ৩ বছর কেটে গেছে।নুরু ছফার চোখ এখনও সর্বত্র খুঁজে বেরায় রহস্যময়ী মুশকান জুবেরীকে।জীবনে একটি মাত্র কেসে ব্যর্থতা তাকে যেনো উপহাস করে। কিন্তু সে হাল ছাড়তে চায় না।নতুন করে তাকে আাবার তদন্ত শুরু করতে বলে প্রধানমন্ত্রীর পি.এস. আশেক মাহমুদ যার একমাত্র ভাগিনা ছিলো মুশকানের শিকার। আবার নেমে পড়ে সে তদন্তে। সাহায্য চায় তার মেন্টর কে. এস খানের কাছে।তিনি নুরে ছফাকে বলেন আবার সুন্দরপুর থেকে সব কিছু শুরু করতে। "যে মাটিতে আছাড় খাইছেন, সেই মাটি থেকেই আপনাকে দাঁড়াতে হবে" এই তার ভাষ্য।ইনফর্মার আতরকে নিয়ে নুরে ছফাশুরু করে তদন্ত। তদন্তের একপর্যায়ে নুরে ছফা জানতে পারে সুন্দরপুরের মাস্টারের সাথে এখনও যোগাযোগ আছে মুশকানের।সে পেয়ে যায় সূত্র। এই সূত্রের মাধ্যমে সে জানতে পারে সে আর এখানে নেই।আাছে কোলকাতায়।কিন্তু এরমধ্যে জটপেকে যায় রহস্য। মুশকান জুবেরির অতীত বন্ধু ডা. আসকর বলেন পূর্বে যা বলেছেন সব বানোয়াট। তাতে বিন্দু মাত্র সত্য নেই। তাহলে কি মুশকান সাধারণ চোরাকারবারি? নাকি ডা. আসকর তাকে বিভ্রান্ত করছে?তদন্তে বের হয় কলকাতায় মুশকানের শেষ শিকার একজন ডাক্তার যে কিনা প্লাস্টিক সার্জারি করে।তাহলে কি মুশকান নিজের চেহারা পাল্টে ফেলেছে,তার পর হত্যা করেছে ডাক্তারকে?এই বার কি তাকে ধরতে পারবে নুরে ছফা নাকি আবার চোখে ধুলো দিয়ে যাবে তাকে মুশকান?জানতে হলে পড়তে হবে রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও আসেননি। বইটি ৪৩১ পৃষ্ঠার কিম্তু পড়তে গেলে আাপনার মনে হবে ২০০ পৃষ্ঠার বই।প্রায় পুরো গল্প টানটান উত্তজনায় ভরপুর।লেখক যেনো পাঠককে বই টি হাত থেকে রাখতে দিতে চান না।আমার মতে প্রথমটির থেকে এই গল্পে Suspense আরও বেশি। তবে এটি পড়ার আাগে অবশ্যই পড়তে হবে রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আাসেননি।না হলে সবকিছু যাবে মাথার ওপর দিয়ে। #বইবাজাররিভিউপ্রতিযোগিতামার্চ২০১৯