“১৯৩০-এ মিউনিখে ছিল হিটলার নামে এক তরুণ, চার বছরের যুদ্ধে সে সৈনিক ছিল। কোনো বিশেষ সামরিক গুণপনা না থাকায় আয়রন ক্রস ও করপোরালের পদের চেয়ে বড় কিছু তার ভাগ্যে জোটে নি। হিটলার ছিল গরীব। কোনো শ্রেণীতেই তাকে ফেলা যেত না। সে ছিল বোহেমিয়ান; শিল্পে কিছুটা রুচি ছিল, কিন্তু শিল্পী হিসেবে সফল হবার শিক্ষা বা প্রতিভা ছিল না। ফলে সে আটকে ছিল বুর্জোয়াশ্রেণী ও শ্রমিকশ্রেণীর মধ্যখানে, বুর্জোয়াশ্রেণীতে যাবার মতো আয় ছিল না, আবার শ্রমিকশ্রেণীতে যাবার মতো কারিগরি দক্ষতা ছিল না। কিন্তু তার ছিল কণ্ঠস্বর, বক্তৃতা করতে পারত। সে হয়ে উঠল বীয়ারের আড্ডার বক্তা, সেখানকার শ্রোতাদের সে জমিয়ে রাখতে পারত। সে যোগ দিল এক মদের আড্ডার বিতর্ক পরিষদে, তাকে নিয়ে যার সভ্যসংখ্যা দাঁড়াল সাত। তার বক্তৃতার টানে আরো লোক জড়ো হল, সে হয়ে দাঁড়াল আড্ডার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ। সে যেসব বাণীবর্ষণ করত, তার অনেকটাই সত্য। সৈনিক হিসেবে সে শিখেছিল শৃঙ্খলাবদ্ধ মানুষেরা জনতাকে সহজেই শায়েস্তা করতে পারে; ব্রিটিশ কায়দার পার্টি পার্লামেন্ট কখনোই দারিদ্র্যের অবসান ঘটাতে পারে না, ঘটাবে না, যে-দারিদ্র্য তার কাছে এমন তিক্ত; যে ভারসাই চুক্তির তাড়নায় পরাভূত জার্মানি তার শেষ কানাকড়ি বন্ধক রাখতে বাধ্য হয়েছে, লুটেরাদের সংযত করার মতো বড় একটা সৈন্যবাহিনী থাকলেই সেই চুক্তির প্রত্যেকটা শর্ত ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলা যায়; য়ুরোপের অর্থনীতিকে শাসন করছে অর্থব্যবসায়ীদের যে প্রবল গোষ্ঠী তারাই চালাচ্ছে মালিকদেরও। এই পর্যন্ত হিটলার যা বুঝেছিল, তাতে কোনো ফাঁক ছিল না। কিন্তু তথ্যের সঙ্গে কল্পনা মিশিয়ে সে সব তালগোল পাকিয়ে ফেলল।”