উপেন্দ্রকিশাের রায়চৌধুরীর জন্ম হয়েছিল ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দের ১২ মে, অধুনা বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার মসূয়া গ্রামে। উপেন্দ্রকিশােরের বাবার নাম কালীনাথ রায়, মায়ের নাম জয়তারা। বাবা কালীনাথ সংস্কৃত, আরবি ও ফারসি ভাষায় বিশেষ পারদর্শী ছিলেন। সাধারণের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন শ্যামসুন্দর মুন্সী নামে। কালীনাথের পাঁচ পুত্র ও দুই কন্যা। যথাক্রমে তাঁদের নামগুলাে হল-সারদারঞ্জন, কামদারঞ্জন, মুক্তিদারঞ্জন, কুলদারঞ্জন, প্রমদারঞ্জন, মৃণালিনী ও গিরিবালা। দ্বিতীয় পুত্র কামদারঞ্জনকে দত্তক নেন কালীনাথের প্রতিবেশী ও জ্ঞাতিভাই হরিকিশাের রায়চৌধুরী। এই কামদারঞ্জনই হলেন উপেন্দ্রকিশাের । দত্তক গ্রহণকালে হরিকিশাের রায়চৌধুরীর নাম ও পদবীর সঙ্গে মিলিয়ে কামদারঞ্জন রায়ের নামকরণ হয় উপেন্দ্রকিশাের রায়চৌধুরী। উপেন্দ্রকিশাের রায়চৌধুরী তার অসামান্য প্রতিভার পরিচয় রেখে গিয়েছেন সাহিত্য, সংগীত, চিত্রশিল্প, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ইত্যাদি বিচিত্র-বিদ্যাবিষয়ক অজস্র রচনার মধ্যে। সর্বত্রই তাঁর অনায়াস ও অবাধ বিচরণ আমাদের বিস্মিত করে। তাঁর কর্মধারা বহুধা ব্যাপ্ত এবং প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাঁর বিশিষ্টতার স্বাক্ষর বর্তমান। তিনি নিপুণ চিত্রকর, সংগীতে বিশেষজ্ঞ, কুশলী যন্ত্রবিদ, নিবিষ্ট বিজ্ঞান-গবেষক এবং সর্বোপরি ছােটদের মনােহারী গল্পকথক ।।
বিশ্বজিৎ ঘোষ
জন্ম ১৯৫৮ সালে, বরিশালে। ‘বুদ্ধদেব বসুর উপন্যাসে নৈঃসঙ্গ্যচেতনার রূপায়ণ’ বিষয়ে গবেষণার জন্য ১৯৯৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ ডি ডিগ্রি লাভ। ১৯৮৪ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন আরম্ভ। বর্তমানে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। বিশ্বজিৎ ঘোষ মূলত প্রাবন্ধিক-গবেষক। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ : বাংলাদেশের সাহিত্য (১৯৯১), নজরুলমানস ও অন্যান্য প্রসঙ্গ (১৯৯৩), আন্তর্জাতিক ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন ও রবীন্দ্রনাথ (১৯৯৪), বুদ্ধদেব বসুর উপন্যাসে নৈঃসঙ্গ্যচেতনার রূপায়ণ (১৯৯৭) ইত্যাদি। ২০১১ সালে গবেষণায় সামগ্রিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ লাভ করেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার। এছাড়া ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ বাংলা একাডেমির ‘ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক স্বর্ণপদক’, ‘জীবনানন্দ দাশ সাহিত্যপদক’, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আবদুর রব চৌধুরী স্বর্ণপদক’, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত ‘মহাকবি মধুসূদন জাতীয় পদক’, ‘কবি নজরুল স্বর্ণপদক’ লাভ করেন।