ভূমিকা শিল্প কী, এই প্রশ্নটির পরিধি অত্যন্ত ব্যাপক। এ সম্বন্ধে মতভেদের অন্ত নেই। শিল্পের সংজ্ঞা নিয়ে তাই দীর্ঘ দার্শনিক ও তাত্ত্বিক আলোচনা হয়েছে এবং তা এখনো অব্যাহত আছে। খ্রিষ্টপূর্বাব্দ কাল হতেই পণ্ডিগণ শিল্পকে নানা ভাবে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করে আসছেন। বহু বিচক্ষণ ব্যক্তি শিল্পকলা বিষয়ক নানা গ্রন্থ রচনা করেছেন। এ সব গ্রন্থ থেকে শিল্পতাত্ত্বিকদের নানা মত এবং তত্ত্বের ভিত্তিতে একটি বিশ্লেষণধর্মী গ্রন্থ রচনার প্রয়াস এটি। যাঁদের বই পড়ে আমি শিল্পকলা বিষয়ক এই গ্রন্থ রচনায় উদ্বুদ্ধ হয়েছি তাঁদের কাছে আমি ঋণী। শিল্পকলা বিষয়ক প্রায় সকল গ্রন্থই বেশ দুর্বোধ্য। সাধারণ পাঠকের উপযোগী গ্রন্থ নেই বললেই চলে। শিল্পশাস্ত্র বিষয়ক যেসব সুপ্রাচীন গ্রন্থের সন্ধান আমরা পাই সেগুলো সাধারণ পাঠককে আকৃষ্ট করে না। প্রাচীন গ্রন্থসমূহের ভাষাগত দুর্বোধ্যতার কারণে সাধারণের বোধগম্য করে লেখা তৈরি করা সহজ কাজ নয়। এই গ্রন্থটি সাধারণ পাঠকের উপযোগি করে রচনা করা হয়েছে। শিল্পানুরাগী পাঠক ও শিল্পকলার শিক্ষার্থীদের গ্রন্থটি সামান্য কাজে আসলেও আমার শ্রম স্বার্থক হয়েছে বলে মনে করব।
ফ্লাপ লেখা কথা বাংলা ভাষায় শিল্পকলাবিষয়ক গ্রন্থের বড়ো অভাব। শিল্প-সাহিত্য একত্রে উচ্চারিত দুটি শব্দ হলেও সাহিত্যবিষয়ক লেখায় আমরা যতটা উৎসাহী শিল্পে ঠিক ততটা নই। এর কারণ অজ্ঞাত। তবে আশার কথা হলো অনেক তরুণ গবেষক এ বিষয়ে উৎসাহিত হচ্ছেন। তারিক ফেরদৌস খানের শিল্পকলাবিষয়ক এ গ্রন্থটি শিল্পকলার একটি আঁকরগ্রন্থ হিসেবে শিল্পকলাবিষয়ে পাঠক সামগ্রিক ধারণা পাবেন। আশা করি শিল্পানুরাগী পাঠক ও শিল্পকলার শিক্ষার্থীদের কাছে এই গ্রন্থটি বিশেষভাবে সমাদৃত হবে।