একদিন মাথার চুল আঁচড়াতে গিয়ে সমির সাহেব দেখলেন তার সব চুল পড়ে যাচ্ছে। প্রতিবার চিরুনি দিয়ে মাথায় আঁচড় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিরুনির সাথে খাবলা খাবলা চুল উঠে আসছে। সমির সাহেব এই দৃশ্য দেখে আতংকে নীল হয়ে গেলেন।
সমির সাহেবের বয়স ষাট বছর। এই বয়সে মাথার চুল পড়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। এতে আতংকিত হওয়ার কিছুই নাই। কিন্তু তিনি আতংকিত না হয়ে পারলেন না। কারণ, তাদের বংশ কয়েক পুরুষ ধরে একটা অভিশাপ বয়ে বেড়াচ্ছে। মৃত্যুর ঠিক একমাস আগে তাদের বংশের পুরুষদের চুল পড়ে মাথা টাক হয়ে যায়। সমির সাহেবের বাবা, দাদা, দাদার বাবা ঠিক এভাবেই মারা গিয়েছিলেন। আজ থেকে যেহেতু তারও চুল পড়া শুরু হলো, তাই ঠিক একমাস পর যে তিনি মারা যাচ্ছেন এটা প্রায় নিশ্চিত। এজন্যই তিনি আতংকে নীল হয়েছেন।
সমির সাহেবের একমাত্র ছেলে শওকত এবং বড়ো মেয়ের জামাই ফরিদ এই অভিশাপের ঘোর বিরোধী। তারা এটা কোনোভাবেই বিশ্বাস করেনা। এই আধুনিক যুগে আবার অভিশাপ কী জিনিস? সব কুসংস্কার। কিন্তু সমির সাহেব তার বিশ্বাসে অনড়। একমাস পর সে মরবেই।
কোনো ভাবেই যখন তাকে বোঝানো যাচ্ছে না যে, মাথার চুল পড়ে গেলে কেউ মরে না, তখন শালা-দুলাভাই মিলে এক মজার ফন্দি আঁটে। কবিরাজের কাছ থেকে তারা নিয়ে আসে টাক মাথায় চুল গজানোর যাদুকরী এক তৈল। যেই তৈল মাথায় মালিশ করলেই চুল উঠে যাবে এক সপ্তাহে। তাদের ধারণা চুল পড়ে গেলে যদি কেউ মরে যায়, তাহলে টাক মাথায় চুল গজানো গেলে নিশ্চয়ই সে বেঁচে যাবে।
এইসব হাস্যরসাত্মক ব্যাপার নিয়েই এই রম্য উপন্যাস। শেষ পর্যন্ত কী হয়েছিল?
সমির সাহেব কি একমাস পর সত্যি সত্যি মরে গেল, নাকি কবিরাজের তেল মাথায় মেখে টাক মাথায় চুল গজালো?
জানতে হলে চমৎকার এই শীতের সকালে এক কাপ চা আর বইটি হাতে নিয়ে মিষ্টি রোদে পা ছড়িয়ে বসে পড়ুন আপনার বারান্দায়।