ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ ম্যাজিক নয় বোকা মেয়ে। এটা হচ্ছে আমাদের মস্তিষ্কের কাজ। মস্তিষ্কের কাজ হচ্ছে কল্পনা করা । কাজেই কল্পনা করার এই ক্ষমতাটাকে একটু কাজে লাগানো। যার যেই কাজ তাকে সেই কাজে ব্যবহার করতে হয়। মস্তিষ্কের কাজ নয় মুখস্ত করা তাই মুথস্ত করা এত কষ্ট। যে ছেলেমেয়েরা এত কষ্ট করে মুখস্ত করে তাদের জন্যে আমার খুব মায়া হয়্।বেচারিরা খামোখা এত কষ্ট করছে- এত কষ্ট করেও তো কিছু শিখতে পারছে না। বুঝলি ঈশিতা মুখস্ত শব্দটাকে একটা অশ্লীল শব্দ হিসেবে ঘোষণা করা উচিত। কেউ যেন মুখেও না আনে। ভূমিকা অনেক দিন আগে একবার ইউনিসেফ থেকে আমার কাছে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল রেডিওয়ের জন্য একটি ধারাবহিক নাটক লিখে দিতে। যে কয়টি বিষয়ে আমি খুব ভয় পাই এবং যে কয়টি বিষয়ে আমার কোনো অভিজ্ঞতা নেই ধারাবাহিক নাটক তার মাঝে অন্যতম। আমি বিনয়ের সাথে তাদের অনুরোধটি পাশ কাটানোর করেও সফল হলাম না নানা কারনে। তারা বললেন এই নাটকটি আসলে কর্মজীবী দরিদ্র ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া বিষয়ে এবং একটি নাটক প্রচারিত হলে সেটি শুনে অনেক কর্মজীবী দরিদ্র ছেলেমেয় লেখাপড়ায় আগ্রহী হতে পারে। আমি অনুরোধ ঢেকি গিলেছিলাম এবং সেই ধারাবাহিক রেডিও নাটক লিখে দিয়েছিলাম। তার কিছুদিন পর তারা আবার হঠাৎ করে আমার সাথে যোগাযোগ করলেন এবং অনুরোধ করলেন আমি যেন এই নাটকাটাকে ২৬ পর্বে টেলিভিশনের জন্য লিখে দেই এবং এবারের অনুরোধে ঢেঁকি নয় , রীতিমত জাহাজ গিলতে হবে। লেখা শুরু করে আমি আবিষ্কার করলাম কাজটি কঠিন। এটি বিশেষ ভাবে কঠিন কারণ তাদের একটি নির্দিষ্ট কিছু বিষয় আছে এবং সেই বিষয়গুলোকে নাটকে পর্যায়ক্রম ভাবে তুলে আনতে হবে। এটি বলা যায় আমার জীবনে প্রথম এবং শেষ ফরমায়েশী কাজ্ আমার টেলিভিশন দেখার অভ্যাস নেই বলে নাটকটি পরিপূর্নভাবে দেখা হয় নি। যারা দেখেছেন তারা পছন্দ করছেন বলেও জানি। যদিও নাটকের পরিচালক এবং কর্মকর্তারা সময় বাড়ানোর জন্য কিছু বিচিত্র চরিত্রের বিচিত্র কর্মকাণ্ড সংযোজন করেছিলেন! আমি যেহেতু ভিডিও পদ্ধতির ঘোর বিরোধী এবং কাগজে ছাপা না হওয়া পর্যন্ত সেটিকে আমার পূর্নাঙ্গ মনে হয় না তাই এটি শেষ পর্যন্ত একটি বই হিসেবে প্রকাশিত হলো। যারা টেলিভিশনে কিছু দেখার থেকে বই হিসেবে পড়তে বেশি পছন্দ করেন তাদের জন্যে শুভ কামনা। মুহম্মদ জাফর ইকবাল ৩১.০১.১১ইং
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
মুহম্মদ জাফর ইকবাল জন্ম : ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫২, সিলেট। বাবা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ফয়জুর রহমান আহমদ এবং মা আয়েশা আখতার খাতুন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, পিএইচডি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটন থেকে। ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এবং বেল কমিউনিকেশান্স রিসার্চে বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করে সুদীর্ঘ আঠার বছর পর দেশে ফিরে দীর্ঘদিন অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছেন। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্ত্রী প্রফেসর ড. ইয়াসমীন হক, পুত্র নাবিল এবং কন্যা ইয়েশিম।