উৎসর্গ প্রাণের আজ অনেক দিনের সেই অশ্রুজল ও দীর্ঘ নিশ্বাসগুলি একত্র করিয়া একছড়া মালা গাঁথিয়াছি! বড় আশা, তােমাকে পরাইয়া গত জীবনের সমুদয় দুঃখ-সমুদয় যন্ত্রণা ভুলিয়া যাইব! মনে করিয়াছিলাম একদিন সৌভাগ্যের উন্নত সিংহসানে আরােহণ করিয়া তােমাকে হৈম-ভূষণে সাজাইব, আমার সে আশা পূর্ণ হয় নাই। শৈশব হইতে কবিতাদেবীর সেবা করিয়া যাহা পাইয়াছি, আজ তাহাই লইয়া তােমার সম্মুখে উপস্থিত। এ'স প্রিয়তমে, তুমি দাঁড়াও! এ জীবনে তােমাকে কোন উপহার দিতে সক্ষম হই নাই আজ আমার মনের সেই সমুদয় দুঃখ-সমুদয় ক্ষোভ সমুদয় সাধ মিটাইয়া আমার এই অতি যত্নের অশ্রুমালাটি তােমাকে পরাইয়া দিই। ইহাই আমার প্রেম-ইহাই আমার ভালবাসা-ইহাই আমার মরুময় জীবনের একমাত্র শান্তিপ্রস্রবণ! তুমি সুখে থাক আমি বিদায় হই।
তােমারই কোবাদ
এই উৎসর্গ যে কবি কায়কোবাদ তার কৈশাের যৌবনের সাথী গিরিবালা দেবীকে উৎসর্গ করেছেন, তার প্রমাণ পাওয়া যায় বর্তমান গ্রন্থে উল্লেখিত কয়েকটি প্রেমের কবিতার ভিতর দিয়ে। কবি ‘প্রাণের’ বলে কারাে নাম উল্লেখ না করলেও বিভিন্ন কবিতায় তাঁর হারানাে প্রিয়ার বিরহ-যন্ত্রণার কথা ঠিকই উল্লেখ করেছেন।
মহাকবি কায়কোবাদ
কায়কোবাদ মহাকবি কায়কোবাদ বা মুন্সী কায়কোবাদ (১৮৫৭ - ২১ জুলাই, ১৯৫১ বাংলা ভাষার উল্লেখযোগ্য কবি যাকে মহাকবিও বলা হয়। তাঁর প্রকৃত নাম কাজেম আল কোরায়শী। মীর মশাররফ কায়কোবাদ, মোজাম্মেল হকের মধ্যে কায়কোবাদই হচ্ছেন সর্বতোভাবে একজন কবি। কাব্যের আদর্শ ও প্রেরণা তাঁর মধ্যেই লীলাময় হয়ে ওঠে। সেজন্য একথা বেশ জোরের সঙ্গে বলা যায় যে কবি কায়কোবাদই হচ্ছেন আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম মুসলিম কবি