"গ্যোতের দেশে" বইয়ের ভূমিকাঃ
বিশ্বসাহিত্যের প্রতি আহমদ ছফার অনুরাগ সৌখিনতার কোন বিষয় ছিল না। শিল্পসত্ত্বার গভীর তাগিদেই আহমদ ছফা অন্বেষী ছিলেন কালজয়ী সাহিত্যের সংস্পর্শে আসার। মহাকবি গ্যোতের সাহিত্যকর্মের আবিষ্কার তাঁরই জন্য এক কাকতালীয় পুরস্কার ছিল বলে আহমদ ছফা তাঁর এক স্মৃতিকথায় উল্লেখ করেছেন। ফাউস্টে’র এক অনবদ্য অনুবাদের মাধ্যমে তাঁর এই জার্মানসংযােগ বিস্তার লাভ করে। এ ধারাবাহিকতায় আহমদ ছফার জার্মান-ভ্রমণও সেই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে রচিত ভ্রমণগাথা ‘জার্মান পার্সপেক্টিভ'। ইংরেজিতে লেখা এই ভ্রমণগাথা অনেক আগে আমার পড়ার সুযােগ হয়েছিল। টুকরাে টুকরাে ভ্রমণ অভিজ্ঞতাকে কিভাবে আকর্ষণীয় সাহিত্যকর্মে রূপান্তরিত করা যায়, এই লেখা তার একটা উজ্জ্বল নিদর্শন হিসেবে তখনই আমার মনে দাগ কেটেছিল। প্রখ্যাত ইংরেজ সাহিত্যিক ডি. এইচ. লরেন্সের ভ্রমণগাথা ‘ট্রাভেলস ইন সার্ডিনিয়ায় একই ধরনের আমেজ আমি পেয়েছিলাম।
আহমদ ছফার সুযােগ্য ভ্রাতুস্পুত্র নূরুল আনােয়ার সার্থক লেখক হিসেবে ইতােমধ্যেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। সাবলীল ও সুখপাঠ্য অনুবাদের মাধ্যমে আহমদ ছফার জার্মান ভ্রমণগাথাকে বৃহত্তর পাঠকসমাজে পৌছে দেয়ার মাধ্যমে নূরুল আনােয়ার একাধারে উত্তরাধিকারের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং নিজের লেখকসত্ত্বাকেও আরও সুদৃঢ় করেছেন।
আমি আশা করব, তার অনূদিত আহমদ ছফার ভ্রমণগাথা “গ্যোতের দেশে” পাঠকসমাজের কাছে সমাদৃত হবে এবং সেই সাথে অকালপ্রয়াত লেখক ও মানবপ্রেমী আহমদ ছফার বহুমুখী সাহিত্যপ্রতিভা জানার নতুন নতুন চাহিদা সৃষ্টি করবে।