ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ মহাদেব সাহার কবিতা তাঁর নিজেরই সৃষ্ট এক স্বতন্ত্র ভুবন যেখানে নিজেকে নিবিড়ভাবে উন্মোচন করেছেন তিনি; বাংলা কবিতার শাশ্বত আবেগময় রূপটিকে তুলে ধরে কবিতাকে তিনি করে তুলেছেন হৃদয়গ্রাহী, মর্মস্পর্শী, লাবণ্যময়, পাঠক আবার ফিরে এসেছে কবিতায়; এই ধ্যানমগ্ন, ব্যথিত, বিভোর কবি মোহময়ী ভাষায় রচনা করে চলেছেন আমাদের জীবনভাষ্য। তাঁর কবিতায় যেমন মূর্ত হয়ে উঠেছে চিরপরিচিত জীবন, এই প্রকৃতি, চরাচর তেমনি উন্মোচিত হয়েছে এক অজানা রহস্যের জগৎ আশ্চর্যখচিত, চিত্রময়, স্বতোৎসারিত, অন্তরের আলো ফেলে কবিতাকে তিনি করে তোলেন গভীর ও রহস্যময়, অশ্রুসজল বিধুর এইসব পঙক্তি আমাদের চিরকালীন সৌন্দর্যের দিকেই নিয়ে যায়।
তাঁর কবিতায় অবারিতভঅবে উঠে এসেছে গ্রাম, গস্যক্ষেত্র, ফেলে-আসা জীবন, তাতে মিশে আছে মাটির গন্ধ, জীবনের নির্যাস। এক অসামান্য সাবলীলতায় তিনি মানব-মানবীর জীবন-রহস্যের সবচেয়ে গাঢ় ও সংবেদশীল রূপটিও উদঘাটন করেন, প্রেম ও সৌন্দর্য জীবন্ত হয়ে ওঠে তাঁর কবিতায়; আমাদের এই দুঃখময় জীবনকেই সহনীয় করে তোলেন তিনি, মানুষ এক মুহূর্তের জন্য হলেও ফিরে আসে স্বপ্নজগতে। তাঁর কবিতার প্রধান আকর্ষণই অন্তর্লীন বেদনাবোধ। এই সঙ্কলনটির কবিতাগুলোতেও স্বাভাবিকভাবেই মিশে আছে এইসব স্মৃতি, গন্ধ, স্বপ্ন, বিষাদ।