তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায় (১৮৪৩-৯১) ছিলেন পেশায় চিকিৎসক, সরকারি কর্মসূত্রে জীবনের অনেকটা সময় তিনি উত্তরবঙ্গে কাটিয়েছিলেন, মিশেছিলেন নানাধরনের লোকের সঙ্গে। কর্মজীবনের অভিজ্ঞতাই তাঁকে কথাসাহিত্য-রচনায় প্রেরণা দিয়েছিল বলে মনে হয়। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্বর্ণলতা (১৮৭৪) প্রথমে রাজশাহী-বোয়ালিয়া থেকে প্রকাশিত ও শ্রীকৃষ্ণ দা-সম্পাদিত জ্ঞানাঙ্কুর পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে (১৮৭২-৭৩) প্রকাশিত হয়। পত্রিকায় ও গ্রন্থাকারে প্রকাশের সময়ে তো বটেই, তিন সংস্করণ পর্যন্ত স্বর্ণলতায় লেখকের নাম ছিল না। হয়তো পাঠকেরা উপন্যাসটিকে কীভাবে গ্রহণ করবেন, সে-বিষয়ে লেখকের মনে সন্দেহ ছিল। রচয়িতার নামের অভাবে অনেকে একে ইন্দ্রনাথ বন্দ্র্যোপাধ্যায়ের রচনা বলে নির্ণয় করেছিলেন, অন্য কেউ কেউ নাকি নিজেকেই গ্রন্থকার বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। স্বর্ণলতার চতুর্থ সংস্করণে রচয়িতাকে লেখা ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি পত্র মুদ্রিত হয়, তাতেই লেখকের নাম প্রথমে উদ্ঘাটিত হয়। বঙ্গিমচন্দ্রের ইতিহাসাশ্রিত রোমান্স যখন বাঙালি পাঠকের চিত্তজয় করেছে, তখন চিরকালীন বাঙালি গ্রাম্য সমাজের বহুলপরিমাণে বর্ণহীন চিত্র নিয়ে তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যে দেখা দিলেন। বিষবৃক্ষে (১৮৭৩) বঙ্কিমচন্দ্র সামাজিক উপন্যাসরচনার নতুন পথ দেখিয়েছিলেন, সত্য, কিন্তু ব� ...
বিস্তারিত দেখুন
তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায় (১৮৪৩-৯১) ছিলেন পেশায় চিকিৎসক, সরকারি কর্মসূত্রে জীবনের অনেকটা সময় তিনি উত্তরবঙ্গে কাটিয়েছিলেন, মিশেছিলেন নানাধরনের লোকের সঙ্গে। কর্মজীবনের অভিজ্ঞতাই তাঁকে কথাসাহিত্য-রচনায় প্রেরণা দিয়েছিল বলে মনে হয়। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্বর্ণলতা (১৮৭৪) প্রথমে রাজশাহী-বোয়ালিয়া থেকে প্রকাশিত ও শ্রীকৃষ্ণ দা-সম্পাদিত জ্ঞানাঙ্কুর পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে (১৮৭২-৭৩) প্রকাশিত হয়। পত্রিকায় ও গ্রন্থাকারে প্রকাশের সময়ে তো বটেই, তিন সংস্করণ পর্যন্ত স্বর্ণলতায় লেখকের নাম ছিল না। হয়তো পাঠকেরা উপন্যাসটিকে কীভাবে গ্রহণ করবেন, সে-বিষয়ে লেখকের মনে সন্দেহ ছিল। রচয়িতার নামের অভাবে অনেকে একে ইন্দ্রনাথ বন্দ্র্যোপাধ্যায়ের রচনা বলে নির্ণয় করেছিলেন, অন্য কেউ কেউ নাকি নিজেকেই গ্রন্থকার বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। স্বর্ণলতার চতুর্থ সংস্করণে রচয়িতাকে লেখা ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি পত্র মুদ্রিত হয়, তাতেই লেখকের নাম প্রথমে উদ্ঘাটিত হয়। বঙ্গিমচন্দ্রের ইতিহাসাশ্রিত রোমান্স যখন বাঙালি পাঠকের চিত্তজয় করেছে, তখন চিরকালীন বাঙালি গ্রাম্য সমাজের বহুলপরিমাণে বর্ণহীন চিত্র নিয়ে তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যে দেখা দিলেন। বিষবৃক্ষে (১৮৭৩) বঙ্কিমচন্দ্র সামাজিক উপন্যাসরচনার নতুন পথ দেখিয়েছিলেন, সত্য, কিন্তু বিষবৃক্ষের কাহিনি প্রাত্যহিক জীবনের কাহিনি নয়।