ফ্লাপে লেখা কথা পল বোমার । কৈশোর পেরোনো এক তরুণ । মা, বাবা আর এক বোনকে নিয়ে ওদের সংসার । প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলো। আরও অনেক তাজা তরুণের সঙ্গে পলকেও ফ্রন্টে যেতে হলো যুদ্ধ করতে । ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টের দুই নম্বর কোম্পানিতে পল বোমারে সঙ্গে এসেছিল জোসেফ, কেমারিখ ,ক্রপ, মুলার আর লিয়ার । ফ্রন্টে এসে ওরা দেখল যুদ্ধের আসল ভয়াবহতা। গুলি ,বোমা,গ্রেনেড, বিষাক্ত গ্যাস । অজস্র মৃত্যু আর পঙ্গুত্ব । শিখল –হয় মারো ,নয় মরো । ওরা জার্মান, যে ফরাসিকে কখনো চোখে দেখনি, আজ তাকেই মারতে হচ্ছে” অচেনা ইংরেজ আর রাশান কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ছে জার্মান সৈন্যদের বিরুদ্ধে। বন্ধুর মৃত্যু এই উপন্যাসের সবচেয়ে হৃদয়বিদারক ঘটনা । কিন্তু এর বাইরে ছোট ছোট অনেক ঘটনা আছে , যেগুলো আনন্দের , দুঃখের, মজার ,হাসির । পড়তে পড়তে পাঠক হাসবেন, আঁতকে উঠবেন এবং শেষ পর্যন্ত আরও একবার যুদ্ধবিরোধী হয়ে উঠবেন । এরিক মারিয়া রেমার্কের এই কালজয়ী যুদ্ধবিরোধী উপন্যাস বিশ্বের অনেক ভাষায় অনূদিত ও সমাদৃত হয়েছে। এ বইয়ের পাঠ যেকোনো পাঠকের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা।
শেখ আবদুল হাকিম
এরিক মারিয়া রেমার্ক
বিপ্লবী, ইহুদী, মেডিকেলের ছাত্র আর ছিচকে অপরাধীসহ ইউরােপের নানা স্থানে ছড়িয়ে থাকা কয়েক হাজার বিক্ষিপ্ত ইহুদীর মধ্যে ছিল স্টেইনার আর কার্ন। চেকোশ্লাভিয়ার অস্থায়ী নিবাসে দুই সপ্তাহের জন্য থাকার কথা ছিল তাদের, কিন্তু থেকেছে তারও বেশি। ওখানকার কর্মকর্তারা ধাক্কিয়ে বের করে দিল, যাবে কোথায় ওরা? ১৯৩৯ সালের এই ইউরােপে তাদের জন্য কোনও জায়গা নেই। এক দেশের বর্ডার পেরিয়ে আসা মানুষগুলাে তাে আরেকটা বর্ডার পার করার চেষ্টা করতেই পারে! দিন এনে দিন খাচ্ছিল ওরা। জুতাের ফিতে আর সেফটিপিন বিক্রি করে কামাচ্ছিল কয়টা পয়সা, এর মধ্যেই স্টেইনার আর কার্ন লক্ষ্য করল ওদের জীবনে এখনও রয়ে গেছে আনন্দের উৎস! প্যারিস আর প্রেম-নাজিদের নিষ্ঠুরতা আর অন্যায় আইনের পৃথিবীতে এমন দুটো আনন্দধারা কেউ কেড়ে নিতে পারেনি। এখনও হারিয়ে যায়নি মানবতা; প্রেমে পড়ার, টিকে থাকার গল্প অন্যদের বলে যাওয়ার মধ্যে যে আনন্দটি আছে তার সঙ্গে আর কিছুর তুলনা হয় না। তাই বলে গেল ওরা, যেন গল্পটি কোনােদিন হারিয়ে না যায়