আত্মজীবনীতে নিজের অনুভূতি-সংবেদনশীলতার কথা বোধকরি বুদ্ধদেব বসুর মতো আর কেউ লেখেননি। তিনপর্বের আত্মজীবনী তাই নিছকই তাঁর বেড়ে ওঠার বিবরণ নয়—কবিতার আত্মা আবিষ্কারের পেছনের যে সাধনা, যে রসায়ন—সেটাই মেলে ধরেছেন বুদ্ধদেব বসু।
হৃদয়াবেগের সঙ্গে শানিত বুদ্ধির সমন্বয়ে এমন অসামান্য সুখপাঠ্য গদ্যে সমকালীন বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসই যেন রচিত হয়েছে বুদ্ধদেবের হাতে। নিজের সৃষ্টির বিষয়ে ভীষণরকম নির্মোহ থেকে সমকালের স্পন্দন আর অন্তরটাই শোনাতে চেয়েছেন পাঠককে।
এই বইয়ে দেখা মিলবে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, বিষ্ণু দে, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, যামিনী রায় কিংবা জীবনানন্দ দাশের। প্রগতি, কল্লোল হয়ে কবিতা পত্রিকার মধ্য দিয়ে এক নতুন যুগের সূচনাপর্বও উন্মোচিত হয়েছে।
‘আমার ছেলেবেলা’, ‘আমার যৌবন’ ও ‘আমাদের কবিতাভবন’—তিন পর্বের স্মৃতিমূলক এই রচনাগুলো এক সঙ্গে আত্মজৈবনিক নামে প্রথম প্রকাশিত হল।
বুদ্ধদেব বসু
বুদ্ধদেব বসু (জন্ম : নভেম্বর ৩০, ১৯০৮ - মৃত্যু : মার্চ ১৮, ১৯৭৪) একজন খ্যাতনামা বাঙালি সাহিত্যিক। তিনি একাধারে কবি, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার, গল্পকার, অনুবাদক, সম্পাদক ও সাহিত্য-সমালোচক ছিলেন। বিংশ শতাব্দীর বিশ ও ত্রিশের দশকের নতুন কাব্যরীতির সূচনাকারী অন্যতম কবি হিসেবে তিনি সমাদৃত। তবে সাহিত্য সমালোচনা ও কবিতা পত্রিকার প্রকাশ ও সম্পাদনার জন্য তিনি বিশেষভাবে সম্মাননীয়।
অল্প বয়স থেকেই কবিতা রচনা করেছেন, ছেলে জুটিয়ে নাটকের দল তৈরি করেছেন। প্রগতি ও কল্লোল নামে দু'টি পত্রিকায় লেখার অভিজ্ঞতা সম্বল করে যে কয়েকজন তরুণ বাঙালি লেখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবদ্দশাতেই রবীন্দ্রনাথের প্রভাবের বাইরে সরে দাঁড়াবার দুঃসাহস করেছিলেন তিনি তাঁদের অন্যতম। ইংরেজি ভাষায় কবিতা, গল্প, প্রবন্ধাদি রচনা করে তিনি ইংল্যান্ড ও আমেরিকায়ও প্রশংসা অর্জন করেছিলেন।