কথাসাহিত্যিকেরা সাধারণত ছােটগল্পে হাত পাকিয়ে উপন্যাস লেখায় মন দেন। এর অবশ্য ব্যতিক্রমও আছে। হুমায়ূন আহমেদ এই ব্যতিক্রমীদের দলে। ঔপন্যাসিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভের পর শুরু হয় তাঁর ছােটগল্প রচনার পালা। আর এও এক বিস্ময়কর সাফল্যের ইতিবৃত্ত। তাঁর প্রতিটি গল্পই একেকটি নিটোল নির্মাণ। ছোটগল্পের স্বল্প পরিসরে তিনি আলাে ফেলেছেন জগৎ ও জীবনের এদিক- ওদিক। আর প্রতিটি আলােকপাতেই উঠে এসেছে এই জীবনের, তা সে যত নিরানন্দই হােক, অনিন্দ্য সৌন্দর্য কিংবা শাশ্বত সত্যের ছবি। অনেকের অভিযােগ, হুমায়ূন আহমেদ শহুরে মধ্যবিত্ত জীবনেরই রূপকার। তাঁর উপন্যাসে সমাজের এই শ্রেণীটিরই প্রাধান্য। ছােটগল্পের ক্ষেত্রে কিন্তু এমন কিছু বলার উপায় নাই। সংকলিত পঁচিশটি গল্পের অন্তত বারােটি সরাসরি গ্রামভিত্তিক। সংখ্যাকে গুরুত্ব না দিলেও এ সত্য পাশ কাটিয়ে যাওয়ার উপায় নাই যে, হুমায়ূন আহমেদের গল্পে গ্রাম-জীবনের যে ছবি পাওয়া যায় তা যেমনি আন্তরিক তেমনি নিখুঁত। হুমায়ূন আহমেদের লেখালেখির একটা বড় অংশজুড়ে আছে মুক্তিযুদ্ধ। এ উক্তি উপন্যাসের ক্ষেত্রে যেমন সত্য, তেমনি ছােটগল্পের বেলায়ও। এই সংকলনের পাঁচটি গল্পের উপজীব্য আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ। হুমায়ূন আহমেদের অনুরাগী পাঠকেরা একটি তুলনামূলকভাবে ছােট সংকলনেই তাঁর বিচিত্র গল্পের পরিচয় ও স্বাদ পেতে পারেন, এমন একটা ধারণা থেকেই এ সংকলন। এখানে বলে রাখা প্রয়ােজন, তাঁর কোনাে গল্পই উপেক্ষাযােগ্য নয়। প্রতিটিই কোনো- না-কোনাে দিক থেকে দ্যুতিময়।
সালেহ চৌধুরী
সালেহা চৌধুরীর এবারের অনুবাদ এইচ. জি. ওয়েলসের অদৃশ্য মানব। তাঁর গ্রন্থসংখ্যা পঞ্চাশের মতাে অনুবাদ করেছেন দশটি গ্রন্থ। গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটক, সব বিষয়ে লিখতে পছন্দ করেন। দীর্ঘদিন প্রবাসে লন্ডনে স্কুলে পড়াতেন। এখন অবসর নিয়েছেন। সৃষ্টিশীল সাতিহ্যিক বলে অনুবাদেও এই সৃষ্টিশীলতা বর্তমান।
হুমায়ূন আহমেদ
পৃথিবীতে অনেক খারাপ মানুষ আছে, কিন্তু খারাপ বাবা একটাও নেই।'
হুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশের প্রবাদপ্রতিম জনপ্রিয় একজন ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও জনপ্রিয় লেখক বলে গণ্য করা হয়। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৩ নভেম্বর, ১৯৪৮, নেত্রকোনা জেলায়। তার আত্মজীবনীতে নেত্রকোনার নানান কথা উঠে এসেছে। এমনকি সেখানে তিনি 'শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ' নামে একটি স্কুল ও প্রতিষ্ঠা করেছেন।
মারা গেছেন: ১৯ জুলাই, ২০১২, নিউ ইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সে সময়ে তিনি লিখেছিলেন 'নিউইয়র্কের নীলাকাশে ঝকঝকে রোদ' এখানে তার ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সময় পাওয়া যায়। ' এখানে তার ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সময় পাওয়া যায়।
সন্তান শীলা আহমেদ, নুহাশ হুমায়ূন, নোভা আহমেদ, বিপাশা আহমেদ, নিনিত আহমেদ, নিষাদ আহমেদ। নুহাশ হুমায়ুন একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার । তার উল্লেখযোগ্য কীর্তি হল 'ইতি তোমারই ঢাকা', 'পেটকাটা ষ' ও 'মশারি'। ২০১৮ সালে 'ইতি তোমারই ঢাকা' নাটকটির মাধ্যমে বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে।
ভাইবোন: মুহম্মদ জাফর ইকবাল, আহসান হাবীব, রুখসানা আহমেদ, সুফিয়া হায়দার, মমতাজ শাহিদ। ভাইবোনদের মধ্যে প্রায় সবাই লেখক। মুহম্মদ জাফর ইকবাল বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় সায়েন্স ফিকশন লেখক। আহসান হাবীব উম্মাদ নামক একটি বহুল প্রচারিত রম্য পত্রিকার সম্পাদক।
জনপ্রিয় উপন্যাসসমূহ:
বাদশাহ নমদার
শঙ্খনীল কারাগার
আগুনের পরশমনি
মেঘ বলেছে যাবো যাবো
বাদশাহ নামদার
অপেক্ষা
নন্দিত নরকে
এইসব দিনরাত্রি সহ আরো আরো অনেক। (যারা হুমায়ূন পাঠে ভীষণ ভীষণ আগ্রহী তারা আরো আরো বইয়ের নাম জানতে চাইলে বই বাজার ডট কমে খুজে দেখতে পারেন। তার সমস্ত বই আমাদের সাইটে পাবেন।) আপনার পড়া হুমায়ূনের বইয়ের নাম আমাদের জানান।
হুমায়ূন পাঠ আপনার সময়কে রাঙিয়ে তুলবে না শুধু, আপনার সময়কে আপনার কাছে নিয়ে আসবে, আপনাকে হাসিকান্নায় মাতিয়ে তুলবে। বই পড়ুন, বইয়ের সাথে থাকুন।