মওলানা ভাসানী বাংলাদেশের রাজনীতির এক মহীরুহ। ব্রিটিশ, পাকিস্তান, বাংলাদেশ - তিন আমলে সমান দাপটে এখানকার জনপদকে আন্দোলিত করেছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। এই জনপদে তিনি ছিলেন বামপন্থি রাজনীতির বটবৃক্ষ।
তাঁর আশ্রয়ে অভিভাবকত্বে বিকশিত হয়েছে, গতি পেয়েছে এখানকার রাজনীতির বাম ধারা। তিনি সমাজ বিপ্লবের অনুঘটক ছিলেন। চীনের সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবে সান ইয়াৎ সেন যে ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি এর সবই করেছিলেন এখানে। দুয়ের ক্ষেত্রে পার্থক্য একটাই-- ওখানে একজন মাও সে তুং ছিলেন, এখানে তেমন কেউ ছিলেন না।
লেখক তাঁর এই অনবদ্য রচনায় গৌরবের- ব্যর্থতার সেই ইতিহাসকেই তুলে ধরেছেন। অভূতপূর্ব ব্যতিক্রমী বিশ্লেষণে। কেবলই জীবনী বা ঘটনাপঞ্জি নয়, এর চেয়ে ঢের গভীর আলোচনায়।
সিরাজ উদ্দিন সাথী
সিরাজ উদ্দিন সাথী ১৯৫৫ সালে তদানীন্তন ঢাকা জেলার (বর্তমান নরসিংদী জেলা) পলাশে জন্মগ্রহণ করেন । শৈশব-কৈশাের কেটেছে বর্তমান পলাশ উপজেলায়—এক অপরূপ প্রাকৃতিক নৈসর্গের মাঝে। প্রকৃতি আর মানুষকে নিয়ে তখন থেকে তার অপার আগ্রহ। ঊনসত্তরের উত্তাল ছাত্র আন্দোলন ও গণ-অভ্যুত্থানে ছিল তার সক্রিয় অংশগ্রহণ । অবিভক্ত কালীগঞ্জ থানায় স্কুল পর্যায়ের ছাত্রদের নেতৃত্ব দেন ঐ সময় । একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন অসীম সাহসিকতার সাথে । দেশ মাতৃকার স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেন। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ছাত্রজীবন কেটেছে চট্টগ্রামে । চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ (অনার্স)সহ এমএ, এলএলবি এবং যুক্তরাজ্যের ওয়েলস্ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবনের শুরুতে কলেজে অর্থনীতির শিক্ষকতা করেছেন । উকিল হতে চেয়েছিলেন, পরে হয়েছেন চাকুরীজীবী । ঘুরেছেন পৃথিবীর অনেক দেশ, দেখেছেন প্রাচীন মানুষের হারিয়ে যাওয়া অনেক সভ্যতা। মানবসভ্যতার আদি এসব নিদর্শন আদিম মানুষ সম্পর্কে তাঁর জানার আগ্রহকে বাড়িয়েছে অনেকগুণ । শান্তিতে নােবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পাদিত এবং গ্রামীণ ব্যাংক কর্তৃক ১৯৮১ সালে প্রকাশিত বেলতৈল গ্রামের জরিমন ও অন্যান্য গ্রন্থের অন্যতম সহ-লেখক তিনি । এছাড়া ১৯৯২ সালে প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধে নরসিংদী ও ২০১১ সালে প্রকাশিত পবিত্র মক্কা নগরীর ইতিকথা এবং দাস প্রথা তাঁর লেখা অপর তিনটি গ্রন্থ।
Title :
বাংলাদেশে বামপন্থী রাজনীতি; মওলানা ভাসানী ও বেহাত বিপ্লব (হার্ডকভার)