দেশের অনেক মানুষ নানাভাবে আমার জন্য তাঁদের ভালােবাসাটুকু প্রকাশ করেছেন। আমি সেই দিনগুলাের খবরের কাগজ দেখিনি, টেলিভিশনের খবর শুনিনি, তার পরও আমি সবার ভালােবাসাটুকু অনুভব করতে পারি। সবার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলে-মেয়েদের অস্থিরতার খবর জানতাম বলে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাসায় এসে সরাসরি সিলেট গিয়েছি। যে মুক্তমঞ্চে বিভ্রান্ত ছেলেটি আমাকে আক্রমণ করেছিল, সেই একই মুক্তমঞ্চে দাঁড়িয়ে আমার ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে কথা বলেছি। মঞ্চে দাঁড়িয়ে কথা বলার সময় আমার ঘুরেফিরে অভিজিৎ, অনন্ত, নিলয়, ওয়াশিক, দীপন—এ রকম সবার কথা মনে পড়ছিল যারা কেউ বেঁচে নেই। আমি কীভাবে বেঁচে গিয়েছি, কেন বেঁচে গিয়েছি এখনাে জানি না। যখন এই লেখাটা লিখছি তখন আমার প্রিয় ছাত্র মাহিদ আল সালামের কথা মনে পড়ছে। শাহবাগে আমার ওপর আক্রমণের প্রতিবাদসভায় সে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেছে অথচ দুৰ্বত্তের আক্রমণে দুই দিন আগে একেবারে হঠাৎ করে তাকে জীবন দিতে হলাে। কে জানে পৃথিবীটা কেমন করে এত নিষ্ঠুর হয়ে যেতে পারে।
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
মুহম্মদ জাফর ইকবাল জন্ম : ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫২, সিলেট। বাবা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ফয়জুর রহমান আহমদ এবং মা আয়েশা আখতার খাতুন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, পিএইচডি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটন থেকে। ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এবং বেল কমিউনিকেশান্স রিসার্চে বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করে সুদীর্ঘ আঠার বছর পর দেশে ফিরে দীর্ঘদিন অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছেন। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্ত্রী প্রফেসর ড. ইয়াসমীন হক, পুত্র নাবিল এবং কন্যা ইয়েশিম।